কলকাতা, 25 মে: ‘রেমাল’ আতঙ্কে সতর্ক পূর্ব রেল ৷ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখা এবং বারাসত-হাসনাবাদ শাখা আগামিকাল রবিবার রাত 11টা থেকে 27মে (সোমবার) ভোর 6টা পর্যন্ত বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন ৷
এছাড়া পূর্ব রেলের যতগুলি বিভাগ রয়েছে, তার মধ্যে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে শিয়ালদা সেকশনের স্টেশনগুলো । তাই যাতে কোথাও কোনোরকম দুর্ঘটনা না ঘটে, সেই কারণে আগে থেকেই একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করছে শিয়ালদা সেকশন ।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আজ শনিবার সন্ধ্যায় নিম্নচাপ অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং তার জেরে ঘূর্ণিঝড় শুরু হবে । হাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে যে হয়তো এই ঝড় সরাসরি উত্তর অভিমুখে এসে সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝে সুন্দরবন এলাকায় স্থলভাগে আছড়ে পড়বে । মনে করা হচ্ছে যে রবিবার মাঝরাতে ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘণ্টায় 135 কিমি হবে ।
তাই ক্ষয়ক্ষতি আটকাতে ইতিমধ্যেই একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন শিয়ালদা শাখার ডিআরএম দীপক নিগম ৷ সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাকি আধিকারিকরাও । শিয়ালদা শাখার সবকটি বিভাগকে যুদ্ধকালীন তৎপরতা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে । সবকটি বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ৷ যদি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আসে, তাহলে যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ৷ অন্যদিকে 25 মে থেকে 27 মে পর্যন্ত সমস্ত আধিকারিক, কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়রদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন:
রেলের তরফে জানা গিয়েছে, স্টেশন চত্বর বা রেল ইয়ার্ড কিংবা রেলের কোথাও জলমগ্ন হয়ে গেলে যাতে সেই জমা হল দ্রুত সরিয়ে দেওয়া যায়, সেই বিষয় তৎপর থাকতে বলা হয়েছে । প্রয়োজনে জলমগ্ন জায়গায় দ্রুত পাম্প লাগিয়ে জল সরিয়ে ফেলতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
রেল কর্তৃপক্ষের আরও নির্দেশ, যাত্রীদের সুবিধার্থে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে বারবার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ঘোষণা চালিয়ে যেতে হবে । ট্রেন বাতিলের খবর আগাম ঘোষণা করতে হবে । প্রবল ঝড়ের জেরে কোনও প্লাটফর্ম ও শেড ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেখানে যাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার করা যায়, তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্লাস্টিক মজুত রাখতে হবে । শিয়ালদা ও কলকাতায় স্টেশন-সহ সমস্ত বড় স্টেশনগুলিতে ডিজি সেট এবং ইমারজেন্সি লাইটের ব্যবস্থা রাখতে হবে । টাওয়ার ওয়াগনগুলিকে প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে কোথাও কোনও ওভারহেড তারের সমস্যা দেখা দিলে, তা দ্রুত মেরামত করে দেওয়া যায় ।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলি যেমন নামখানা, ডায়মন্ড হারবার, হাসনাবাদ - যেখানে ঝড়ের প্রভাব অনেক বেশি গভীরভাবে পড়তে পারে, এইসব জায়গাগুলির ওপরে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে । এই জায়গাগুলিতে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগন্যাল ও টেলিকম কর্মীদের যেকোনও জরুরি পরিস্থিতির জন্য তৎপর থাকতে বলা হয়েছে । অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের প্রতিটি স্টেশনে বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ সেশনগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে । এছাড়াও ট্রেন চালকদের তৎপর থাকতে বলা হয়েছে ।
শিয়ালদহ, দমদম, বারাসত, নৈহাটি, রানাঘাট-সহ বাকি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ডিজেল লোকোগুলিকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । স্টেশনের ভিতরে ও বাইরের লাগানো সমস্ত বিজ্ঞাপন এবং ডিসপ্লে বোর্ড পরীক্ষা করা হচ্ছে, যাতে ঝড় এলে হঠাৎ করেই সেই বোর্ড খুলে পড়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে । প্ল্যাটফর্ম শেডগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে । পাশাপাশি ট্র্যাক, ব্রিজ, ফুট ওভারব্রিজের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তাই সর্বক্ষণ সেগুলি পরীক্ষা করা হচ্ছে । এছাড়াও যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে ।
শিয়ালদহ ডিভিশনে যেই ট্রেনগুলির যাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে ও বাতিল করা হয়েছে তার তালিকা এক নজরে:
26 মে রবিবার যে ট্রেন গুলি বাতিল থাকছে: