কলকাতা, 13 জুলাই: রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল রাজভবনে আটকে রয়েছে। রাজ্যপাল বিলগুলি আটকে রেখে সংবিধানের 200 নম্বর ধারার উলঙ্ঘন করছেন। যা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুশাসনের বিরোধী এবং জনকল্যাণের পরিপন্থী। এই অভিযোগে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। গত শুক্রবার ওই মামলায় আটটি বিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, রাজভবন সূত্রের খবর, আটকে থাকা বিলের সংখ্যা তার দ্বিগুণেরও বেশি। 2013 থেকে 2024 সাল পর্যন্ত মোট 18টি বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে।
কেন আটকে রয়েছে তা বিস্তারিত তথ্য-সহ বেশ কয়েকবার প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। তারপরও কেন মামলা করা হয়েছে? রাজভবন সূত্রের দাবি, রাজ্য সরকার এবিষয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করেও বিশেষ লাভবান হতে পারবে না। কারণ, গত নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা আটকে থাকা 22টি বিলের একটি তালিকা পাঠিয়েছিল রাজভবনকে। যেগুলি রাজভবনে আটকে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। তখনই রাজ্যপাল তৎপরতার সঙ্গে সাংবিধানিক নিয়মরীতি মেনে পর্যালোচনা করেছিলেন। তারপর দেখা গেল, রাজভবনের কারণে একটি বিলও আটকে নেই। প্রতিটি বিলের তৎকালীন স্ট্যাটাস রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, এই 6 মাসের মধ্যে 22টির বিলের চারটিতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে স্বাক্ষর করে দেন রাজ্যপাল। বাকি 18টির মধ্যে 8টি বিল নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। তবে, সেই আটটি বিলের মধ্যে লিঞ্চিং প্রতিরোধ বা 2019 সাবলের গণপিটুনি বিল নেই। অথচ, রাজভবন এই বিল আটকে রাখায় আইন তৈরি করা যায়নি বলেই দায় সেরেছিল রাজ্য সরকার বরং, ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং) বিলের বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কিছু বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এতদিনেও রাজ্য সরকার বা বিধানসভার প্রতিক্রিয়া পৌঁছয়নি রাজভবনে।
এছাড়াও, 2022 সালের পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল, পশ্চিমবঙ্গ পশু এবং মৎসবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল, পশ্চিমবঙ্গ বেসরকার বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল, পশ্চিমবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল, পশ্চিমবঙ্গ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল ইত্যাদি বিলগুলি রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষ।
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এখনও অনুমতি না-মেলায় রাজভবনে পড়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ নগর পরিকল্পনা এবং নগরোন্নয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন (সংশোধনী) বিল নিয়ে বিভাগীয় দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক হয়নি। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হলেও তৎক্ষণাৎ রাজ্যপাল স্বাক্ষর করে দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।