কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: টানা 11 বছর পর সারাদেশ জুড়ে বুধবার থেকে রেলের স্বীকৃত ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের নির্বাচন। নিজেদের দাবিদাওয়া থাকলেও রেল থেকে মেট্রো সবকটি ইউনিয়ন রেল ও মেট্রোর বেসরকারিকরণ রোখার বিষয়টিকেও দাবির একেবারে শীর্ষে রেখেছে ইউনিয়নগুলি।
'সিক্রেট ব্যালট' পদ্ধতিতে আগামী 4, 5 ও 6 তারিখ স্বীকৃত ট্রেড ইউনিয়ন নির্বাচন হতে চলেছে। কলকাতা মেট্রোয় নির্বাচন হবে বুধ ও বৃহস্পতিবার। পুনর্নির্বাচন হবে আগামী 10 ডিসেম্বর। গণনা এবং ফলপ্রকাশ আগামী 12 ডিসেম্বর। অরাজনৈতিক বলে দাবি করলেও আদতে সবকটি সংগঠনই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের অনুমোদিত বলেই রেল সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, রেলে শেষবার নির্বাচন হয়েছিল 2013 সালে। তার আগে 2007 সালে ভোট হয়। পূর্ব রেলে জয়ী হয়েছিল ইস্টার্ন রেলওয়েস মেনস ইউনিয়ন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ক্ষেত্রে দু'টি ইউনিয়ন স্বীকৃতি পায় সাউথ-ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়ন ও সাউথ-ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স কংগ্রেস। অন্যদিকে, কলকাতা মেট্রোর ক্ষেত্রে জয়ী হয় বাম অনুমোদিত মেট্রো রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়ন। তবে লক্ষণীয় বিষয় হল, রেল হোক বা মেট্রো সবকটি ট্রেড ইউনিয়নের দাবিদাওয়ার মধ্যে সব থেকে উপরে রয়েছে রেল ও মেট্রোর বেসরকারিকরণ বন্ধ করা।
মেট্রো রেলওয়ে মেন্স ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি সুজিত ঘোষ জানিয়েছেন, মেট্রোর বেসরকারিকরণ রোখা এবং অষ্টম বেতন কমিশন লাগু করা অন্যান্য ইস্যুর পাশাপাশি এই দুটি ইস্যুকেই প্রধান হাতিয়ার করে এই নির্বাচনে নেমেছে মেন্স ইউনিয়ন। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহসভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, "মেট্রো ও কর্মীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই রেল ও মেট্রোর বেসরকারিকরণ ইস্যুটিকে মূল হাতিয়ার করে নির্বাচনে লড়াই করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে কলকাতা মেট্রো বেসরকারিকরণের দিকে এগোচ্ছে। ইতিমধ্যেই গ্রিন লাইনে দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের কাছে সম্পত্তি হস্তান্তর করার নির্দেশ এসে গিয়েছে। কলকাতা মেট্রোই দেশের মধ্যে একমাত্র মেট্রোরেল যেটি ভারত সরকারের রেলমন্ত্রকের অধীনস্থ। তবে কলকাতা মেট্রোকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।"
অন্যদিকে, পূর্ব রেলের ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি অমিত ঘোষ বলেন, "বারবার রেল বেসরকারিকরণে চক্রান্ত করা হয়েছে। বাকি ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের প্রথম দাবি হল রেল বেসরকারিকরণকে রুখতে হবে।" উল্লেখ্য, পূর্ব রেলের নির্বাচনকে ঘিরে বিরোধীদের উপরে রেল শ্রমিক কর্মচারী এবং নেতাদের উপর ব্যাপক সন্ত্রাস ও হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে যে, এর পিছনে শাসকদল সমর্থিত ইউনিয়নের ভূমিকা রয়েছে। কাছরাপাড়া ও লিলুয়াতেই সব থেকে বেশি সন্ত্রাস হচ্ছে বলে অভিযোগ।