পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

শান্তিনিকেতনে 6 দিনের পরিবেশবান্ধব পৌষমেলা, অনলাইনে শুরু প্লট বুকিং - SANTINIKETAN POUSH MELA 2024

পুরনো প্রথা মেনে 7 পৌষ শান্তিনিকেতনে শুরু হতে চলেছে পৌষমেলা ৷ এবারের বিশেষত্ব কী থাকছে ? বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ৷

SANTINIKETAN POUSH MELA 2024
পুরনো রীতি মেনে শান্তিনিকেতনে বসছে পৌষমেলা (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 26, 2024, 7:39 PM IST

বোলপুর, 26 নভেম্বর: এবার 'পরিবেশবান্ধব' পৌষমেলা হতে চলেছে ৷ জানাল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । এছাড়াও প্রতারণা রুখতে অনলাইনে স্টলের জন্য প্লট বুকিং করার জন্য বলা হয়েছে । ইতিমধ্যেই পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর সঙ্গে একটি ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেনের ৷

2019 সালে শেষবার পৌষমেলা করেছিল বিশ্বভারতী । চার বছর পর ফের পূর্বপল্লীর মাঠে হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা । তাও আবার শান্তিনিকেতন 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' হওয়ার পর এই প্রথম বিশ্বভারতীর পৌষমেলা ৷ তাই মানুষজনের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা রয়েছে ৷ এই বিষয়ে উপাচার্য বলেন, "সুভাষবাবুর দেওয়া গাইডলাইন মেনে আমরা এবার পৌষমেলা করতে সচেষ্ট হচ্ছি ৷ পরিবেশবান্ধব পৌষমেলার করব । জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে । 6 দিনের পৌষমেলা হবে ৷ অনলাইনে প্লট বুক করতে হবে ৷ আমরা সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে মেলা করতে বদ্ধপরিকর ।"

পৌষমেলার মাঠ পরিদর্শন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের (ইটিভি ভারত)
সুভাষ দত্ত বলেন, "আমি পরিবেশ আদালতে গাইডলাইনগুলি উপাচার্যকে দিয়েছি ৷ উনি সেগুলি মেনেই মেলা করার জন্য বদ্ধপরিকর । এবার পৌষমেলার থিম হোক 'পরিবেশবান্ধব'।"মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী প্রতি বছর পৌষমাসের শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট একটি মেলার আয়োজন করবে । সব রকম সহযোগিতা করবে বিশ্বভারতী । সেই মতো চলে আসছিল পৌষমেলা ও পৌষ উৎসব । প্রথমে পুরনো মেলার মাঠে বসত এই মেলা। তবে যত দিন গিয়েছে মেলার পরিধি বেড়েছে ৷ তাই আশির দশক থেকে পৌষমেলা পূর্বপল্লীর মাঠে স্থানান্তরিত হয় ৷ 2019 সালে শেষ বার 'ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা' অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৷ 2020 সালে কোভিড পরিস্থিতি জন্য বন্ধ হয়ে যায় মেলা ৷ পরবর্তীতে বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর একাধিক মন্তব্য ও সিদ্ধান্তের জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে ৷ ফলে 2021 ও 2022 সালে আর পৌষমেলা করেনি বিশ্বভারতী । 2023 সালে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী পূর্বপল্লীর মাঠে মেলা করার জন্য রাজ্য সরকারকে দেয় ৷ যা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে ৷ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিককে ৷
এ বছর 6 দিন ধরে চলবে পৌষমেলা (ইটিভি ভারত)

এবার শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই আগের মতো মেলা করার । অর্থাৎ, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ট্রাস্ট ডিড অনুযায়ী হবে পৌষমেলা ৷ চার বছর পর ফিরছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা । বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার 6 দিনের পৌষমেলা হবে ৷ সাতদিনের দিন মাঠ পরিষ্কারের কাজ শুরু হবে ৷ মেলায় স্টলের জন্য প্লট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখতে অনলাইন পদ্ধতি শুরু করা হচ্ছে ৷ মেলার জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাছে আগের মতোই সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্বভারতী ।

মেলার মাঠ ঘুরে দেখল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন (ইটিভি ভারত)

জল, বিদ্যুৎ, নিকাশি, নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে । এই সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, বোলপুর মহকুমাশাসক অয়ন নাথ, বোলপুর পৌরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) রানা মুখোপাধ্যায়, বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল-সহ শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ, বিদ্যুৎ বিভাগ, দমকল বিভাগ, বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানার সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয় কুমার সরেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার ৷ বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর উপাচার্য ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ পূর্বপল্লীর মাঠ ঘুরে দেখেন ৷

রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, "বিশ্বভারতী মেলা করছে এতে আমরা খুশি ৷ জেলা প্রশাসনের কাছে যা যা সাহায্য চাওয়া হয়েছে তাই করা হবে ৷ জল, আলো, নিরাপত্তা সব দেওয়া হবে ৷ মেলাটা সুন্দরভাবে হোক, সবাই উপভোগ করুক এটাই আমরা চাই ৷"

প্রসঙ্গত, পৌষমেলায় দূষণ হচ্ছে এই মর্মে 2016 সালে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন সুভাষ দত্ত । 2017 সালে আদালত মেলায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক নির্দেশিকা দেন ৷ প্লাসটিক বর্জন, কাঠ বা কয়লার উনুন ব্যবহার করা যাবে না, শব্দ মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে, মেলার মাঠে পর্যপ্ত জল দিতে হবে, বায়ো টয়লেট ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি । এবার এগুলির উপর বিশেষ নজর দেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানান উপাচার্য ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details