দুর্গাপুর, 25 অক্টোবর: আপত্তিকর ছবি ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ৷ সেই অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থানার পুলিশ ৷ ধৃতদের নাম কুন্দন মণ্ডল ও বিষ্ণুদেব প্রসাদ ৷ দু’জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, সোশাল মিডিয়া-সহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পুরুষ ও মহিলাদের ছবি সংগ্রহ করতেন কুন্দন ও বিষ্ণুদেব ৷ তার পর একজন পুরুষ ও একজন মহিলার ছবি নিয়ে বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে যৌনমিলনের ছবি তৈরি করতেন তাঁরা ৷ সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করেই ওই ছবি তাঁরা পাঠিয়ে দিতেন সংশ্লিষ্ট পুরুষ বা মহিলার কাছে ৷
ধৃত নাম কুন্দন মণ্ডল ও বিষ্ণুদেব প্রসাদ (নিজস্ব চিত্র) পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এর পরই এই দু’জন ভয় দেখানোর কাজ শুরু করতেন ৷ ওই আপত্তিকর ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার কথা বলে ভয় দেখাতেন ৷ ছবি ভাইরাল না-করার শর্ত হিসেবে টাকার দাবি করা হতো ৷ এভাবে কুন্দন ও বিষ্ণুদেবের ফাঁদে পড়ে অনেকে টাকা দিয়েও দিতেন ৷
2024 সালের মে মাসে কাঁকসা থানার মলানদিঘি ফাঁড়িতে এই নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে ৷ তদন্তে নামে পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে কুন্দন ও বিষ্ণুদেবের নাম উঠে আসে ৷ পুলিশ জানতে পারে যে কুন্দন ও বিষ্ণুদেব স্থানীয় আড়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে একটি কল সেন্টার চালান ৷ সেখান থেকেই যাবতীয় প্রতারণার কাজ চালান তাঁরা ৷
যদিও তাঁরা দু’জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ৷ কুন্দন গিরিডির বাসিন্দা ৷ বিষ্ণুদেবের বাড়ি হাজারিবাগে ৷ এর পর পুলিশ ওই দু’জনের সন্ধান করতে থাকে ৷ অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের সন্ধান পায় পুলিশ ৷ কাঁকসার বামুনাড়া দিয়ে বাইকে যাওয়ার সময়ই দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
তাদের কাছ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ সেই ব্যাগ থেকে তিনটি ভুয়ো আধার কার্ড, চারটি মোবাইল ফোন ও ছ’টি এটিএম কার্ড পাওয়া গিয়েছে । ধৃতদের পুলিশি হেফাজত চেয়ে শুক্রবার তোলা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে । ধৃতদের চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের থেকে জানার চেষ্টা করা হবে যে কতজনের সঙ্গে তাঁরা এই ধরনের প্রতারণা করেছেন ? কত লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ? কোন অ্যাপের মাধ্যমে ছবি তৈরি করতেন তাঁরা ? এই চক্রে আরও কেউ জড়িত আছে কি না !