চন্দননগর, 24 সেপ্টেম্বর: দুষ্টুর খোঁজ দিলেই মিলবে 10 হাজার টাকা পুরস্কার ৷ সোশাল মিডিয়ায় ঘোষণা পশুপ্রেমী ঋষিতা মজুমদারের ৷ এছাড়াও বালির বিভিন্ন জায়গায় সাঁটা হয়েছে পোস্টার। নিখোঁজ পোষ্যের সন্ধানে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তা সত্বেও কোনও খোঁজ মেলেনি দুষ্টুর। তাতেই শোকাহত পশুপ্রেমী ঋষিতা।
পাঁচ মাসের পোষ্যকে সন্তান স্নেহে মানুষ করেছেন চন্দননগরের লিচুতলার বাসিন্দা ঋষিতা। গত 6 সেপ্টেম্বর তাঁর দুষ্টু নামে ওই বিড়ালটি বালি ব্রিজে হারিয়ে যায়। তারপর থেকে নানা ভাবে খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পশুপ্রেমী সংস্থা ও সাধারণ মানুষের সাহায্য নিয়েও নিরাশ হতে হয়েছেন ঋষিতা। তাই পুরস্কারের আবেদন করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন তিনি। এখন ফোনের আশায় দুষ্টুর বিছানা আঁকড়ে ধরে অপেক্ষায় দিন গুনছেন এই পশুপ্রেমী ।
পোষ্যের সন্ধান চেয়ে পুরস্কার ঘোষণা (ইটিভি ভারত) গত 6 সেপ্টেম্বর চন্দননগরের শ্বশুর বাড়ি থেকে হাতিবাগানে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলেন। মোটর বাইকে করে স্বামীর সঙ্গে যাচ্ছিলেন তিনি ৷ হটাৎ স্কুটির সামনে বাস্কেট থেকে ঝাঁপ দেয় দুষ্টু। বালি ব্রিজের কাছে সেদিন নিখোঁজ হয়। ঋষিতার বড় আদরের দুষ্টু নামে এই পোষ্য বেড়ালটি ৷ বর্তমানে বেড়ালটির দেড় বছর বয়স। স্নান করানো থেকে খাওয়ানো সব কিছুই করতেন নিজের হাতেই।
ঋষিতা বলেন, "আগে ট্রেনে করে যাতায়াত করতাম। এই প্রথম দুষ্টুকে বাইকে করে নিয়ে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলাম। বালি ব্রিজ যখনই আসে তখনই আমার স্বামী বলল বেরোনোর চেষ্টা করছে দুষ্টু। বাইক দাঁড় করাতেই লাফ মেরে পালিয়ে যায়। ভয়ে বালি ব্রিজের রেললাইন ধার দিয়ে দৌড়াতে থাকে। রেলের কোন একটা গর্তে ঢুকে পড়ে। ব্যস্ততম রাস্তায় আমিও দৌড়াতে থাকি। কিন্তু আর কোনও খোঁজ পাইনি। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে আমি খোঁজ চালাই। আমার অবস্থা দেখে ফুড ডেলিভারি বয় থেকে বস্তির সাধারণ মানুষ খোঁজাখুঁজি শুরু করে। অনেক চেষ্টা করেও খোঁজ পায়নি। সেইদিনই দুষ্টু নিখোঁজের পোস্টার করি ৷ এবার সোশাল মিডিয়ায় পুরস্কার ঘোষণা করি।"
মাত্র পাঁচ মাস বয়সে বেড়ালটিকে পেয়েছিলেন ঋষিতা ৷ ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনেই ছেড়ে দিয়ে গেয়েছিল দুষ্টুকে। সারমেওয়রা মেরে ফেলবে, সেই ভয়েতে নিজেই বুকে আগলে নিয়ে ঘরে তুলেছিলেন। ওষুধ ও ইনজেকশন সব কিছু দিয়ে বড় করেন। এছাড়াও একাধিক বিড়াল ও পথ সারমেয়দের দু'বেলা খেতে দেন চন্দননগরের এই গৃহবধূ। দুষ্টু নিখোঁজ হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। পোষ্যের নাম মনে এলেই চোখে জল চলে আসছে তাঁর। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও খোঁজ মেলেনি ৷ ঋষিতা বাপের বাড়িতে একাধিক সারমেয় ছিল। বিয়ের পরও পথ সারমেয় থেকে বিড়ালের খাবারের ব্যবস্থা করেন রোজ।