কলকাতা, 15 অগস্ট: আগে নিরাপত্তা, তার পর কাজ ৷ এই দাবি নিয়েই স্বাধীনতা দিবসে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ নার্সিং কর্মীদের । হাসপাতালের নার্সিং সুপারের নেতৃত্বে এই দিন প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান নার্সিং কর্মীরা । নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করা পর্যন্ত কাজে কেউ যোগ দেবে না বলেই জানান তাঁরা । বুধবার রাতে যে ভয়ঙ্কর ভাঙচুর ঘটেছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, তার জেরেই ভীত হাসপাতালের নার্সিং কর্মীরা ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালের বক্তব্য৷ (ইটিভি ভারত) তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে জরুরি বিভাগের ভিতরে অসংখ্য পুলিশ থাকে । কিন্তু ওইদিন কোনও পুলিশকে দেখা যায়নি । বরং পুলিশ নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় নিয়েছিল হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় । কর্মরত নার্সদের কাছেই তাঁরা নিরাপত্তা চাইতে এসেছিলেন । ফলে আরজি করে এত বড় ঘটনা ঘটার পরেও নিরাপত্তা নেই বলেই নার্সদের দাবি । তবে এই মুহূর্তে নার্সিং সুপারে নেতৃত্বে অধ্যক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক করছেন তাঁরা । যতক্ষণ না তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাজে যোগ দেবেন না নার্সিং কর্মীরা ।
আরজি করের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালকে ঘিরে নার্সদের বিক্ষোভ৷ বৃহস্পতিবার৷ (নিজস্ব চিত্র) আরজি করের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালকে ঘিরে নার্সদের বিক্ষোভ৷ বৃহস্পতিবার৷ (নিজস্ব চিত্র) কোনোভাবেই নার্সিং পড়ুয়ারা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষকে ভিতরে ঢুকতে দেননি । তাঁদের দাবি, অবিলম্বে গতকালের ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে কলকাতা পুলিশকে । তাঁর সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও সুনিশ্চিত করতে হবে । এই সব কিছুই লিখিতভাবে দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে । কর্তৃপক্ষ সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান আন্দোলনকারীরা ।
আরজি করের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালকে ঘিরে নার্সদের বিক্ষোভ৷ বৃহস্পতিবার৷ (নিজস্ব চিত্র) সেই বৈঠকে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকেও আসতে হবে বলে দাবি জানান আন্দোলনকারীরা । দীর্ঘক্ষণ দু’পক্ষের কথাবার্তার পর অবশেষে অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আমার এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হোক । আমি আলোচনায় বসব । তার সঙ্গে সুপার থাকবেন । তোমাদের সকলের কথা আমি শুনব । পুলিশ কমিশনারকে ফোন করব আসার জন্য । লিখিত হিসাবেও তোমাদের দাবির উত্তর আমি দেব ।’’
আরজি করের অধ্যক্ষ সুহৃতা পালকে ঘিরে নার্সদের বিক্ষোভ৷ বৃহস্পতিবার৷ (নিজস্ব চিত্র) অন্যদিকে বুধবার রাতে ইমার্জেন্সি বিভাগের ভিতরে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের পর নষ্ট হয়েছে একাধিক সরকারি সম্পত্তি । জরুরি বিভাগের ভিতরে ঢুকে এইচডিইউ ও ইএনটি বিভাগ পুরো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । ভেঙে ফেলা হয়েছে ভেন্টিলেটর যন্ত্র । এছাড়াও তিনতলা পর্যন্ত দরজা ভেঙে দিয়েছেন তাঁরা । একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে দেওয়া হয়েছে । পুলিশের ঘরে ভাঙচুর চলেছে । এই পরিস্থিতির জেরে এ দিন বন্ধ রয়েছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা ।