কলকাতা, 10 জানুয়ারি: তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ যে মন্তব্য করেছেন, তা সমিচীন নয়। অবমাননাকর ও নিন্দাজনক। অবিলম্বে কুণাল ঘোষকে ক্ষমা চাইতে হবে।
মমতাকে লেখা চিঠিতে নরেন চট্টোপাধ্যায় লেখেন, "আপনি নিশ্চয়ই অবগত হয়েছেন যে, কুণাল ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন সংসদীয় রাজনীতিতে নতুন দল করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ব্যর্থ অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফল হয়েছেন। এই মন্তব্যের অর্থ দাঁড়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর থেকেও আপনি বড় ও সফল রাজনীতিবিদ। পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশের জনমানষে শ্রী কুণাল ঘোষের এই বিবৃতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।"
তাঁর আরও উল্লেখ, "সুভাষচন্দ্র বসুকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ পরাধীন দেশে 'দেশনায়ক'-এর পদে বরণ করেছিলেন মহাত্মা গান্ধি সুভাষচন্দ্র বসুকে 'দেশপ্রেমিকোত্তম' বলে বর্ণনা করেছেন। সেই মহান দেশপ্রেমিকত্তম নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে আপনার তুলনায় ব্যর্থ বলে বর্ণনা করে ছোট করেছেন। আশা করব, নেতাজিকে নিয়ে মানুষের ভাবাবেগে শ্রী কুণাল ঘোষ যে আঘাত করেছেন, তার প্রতিকারে আপনি সঠিক বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবেন এবং কুণাল ঘোষকে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনার নির্দেশ দেবেন।"
এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া পাওয়া না-গেলেও সোশাল মিডিয়ায় পাল্টা জবাব দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। নরেন চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্যে করে কুণাল লেখেন, "আপনার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আমি আবার বলছি,
নেতাজি দেশনায়ক। আমাদের গর্ব। আমার মতে আজাদ হিন্দ সরকারের কারণে নেতাজিকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। রাজ্যসভায় আমি নেতাজি মৃত্যুরহস্যের সব ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবিতে সরব ছিলাম। নেতাজি বিশ্বের মানচিত্রের একজন সেরা বিপ্লবী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মহানায়ক। সর্বকালের সেরা অন্যতম বাঙালি।"
তৃণমূল নেতার আরও সংযোজন, "কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আলাদা দল গড়ে সাফল্যের প্রশ্নে নেতাজি বা আমার পরমশ্রদ্ধেয় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের থেকে অনেক এগিয়ে এবং সফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি দল গঠন করেছিলেন, কিন্তু তাঁর পরিচয় সেই দল হয়ে ওঠেনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার মানুষের আশীর্বাদে রাজ্যে তৃতীয়বার সরকারে, সারা দেশে রাজনীতিতে ও উন্নয়নের মডেলে এই দলের প্রভাব। ফলে নেতাজির জায়গায় নেতাজির যেমন মহাউচ্চতা ছিল, আছে ও থাকবে ৷ তেমনি কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে একা দল গড়ে সাফল্যের প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্বটা স্বীকার করুন।"