কলকাতা, 23 অক্টোবর: ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বৃষ্টি ৷ এই অবস্থায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের কাছ থেকে প্রতি ঘণ্টায় আবহাওয়া ও পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন ।
ওড়িশার ধামরা ও ভিতরকণিকার মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় 'দানা' । আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় যখন আছড়ে পড়বে তখন হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় 120 কিলোমিটার । মূলত, এটাকে মাথায় রেখেই মঙ্গলবার থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে নবান্ন । ইতিমধ্যেই কলকাতা দুই 24 পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে । কলকাতায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে ।
ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুরু বৃষ্টিপাত (নিজস্ব ছবি) তবে দুই 24 পরগনা থেকেও কোথাও মাঝারি কোথাও হালকা বৃষ্টির খবর আসছে । কিন্তু ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পর্ব আগেই শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন আবহবিদরা । ঘূর্ণিঝড় যত এগিয়ে আসবে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়বে । বাড়বে হাওয়ার বেগও । পারাদ্বীপ থেকে এই মুহূর্তে 560 কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'দানা' । সাগরদ্বীপ থেকে 'দানা'র অবস্থান 630 কিলোমিটার ।
ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র কথা মাথায় রেখেই সতর্ক রয়েছে রাজ্য প্রশাসন । ইতিমধ্যেই এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে । পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাব পড়তে পারে এমন জেলাগুলিতেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই সমুদ্র তীরবর্তী জেলাগুলিতে মাইকিং করা হচ্ছে । নবান্নের তরফ থেকে দফায় দফায় জেলাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে । প্রভাব পড়তে পারে এমন জেলাগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই নবান্নের নির্দেশে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে এনডিআরএফ-এর পাশাপাশি দমকল ও বিদ্যুৎ দফতরের পর্যাপ্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে । পাঠানো হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও ।
নবান্ন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই । তবে এই মুহূর্তে ঝড় আসার আগে সব প্রস্তুতি সেরে রাখছে রাজ্য প্রশাসন । এখনও পর্যন্ত যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিভিন্ন উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে ৷ তবে পরিস্থিতির উপর নজর রেখে বিকেলের পর থেকে ভেসেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে । আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভেসেল চলাচল করবে না । কিন্তু পরিস্থিতির যদি অবনতি হয়, আগেভাগেই ভেসেল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে ।
ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই সাত জেলায় এনডিআরএফ’র ন’টি ও এসডিআরএফ’র 13টি দল মোতায়েন করা হয়েছে । এর মধ্যে তিন কোম্পানি এনডিআরএফ ও চার কোম্পানি এসডিআরএফ মোতায়েন হয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনায় । উত্তর 24 পরগনায় দুই কোম্পানি এনডিআরএফ ও এক কোম্পানি এসডিআরএফ । পূর্ব মেদিনীপুরে তিন কোম্পানি এনডিআরএফ এবং দুই কোম্পানি এসডিআরএফ ।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এক কোম্পানি এনডিআরএফ ও দুই কোম্পানি এসডিআরএফ । ঝাড়গ্রামে এক কোম্পানি এসডিআরএফ । হাওড়ায় দুই কোম্পানি এসডিআরএফ । হুগলিতে এক কোম্পানি এসডিআরএফ মোতায়েন করা হয়েছে । নবান্নে চালু হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম । 1070 এবং 033-22143526 নম্বরে ফোন করলেই যোগাযোগ করা যাবে রাজ্যের সদর দফতরে । আলাদা করে কন্ট্রোল রুম চালু করেছে রাজ্য পূর্ত দফতর (033-22141858 ও 033-22141855) এবং জলস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (033-29520161) ।