বারুইপুর, 18 জুন: অনলাইন ভিডিয়ো গেমের আসক্তি ৷ তা-ও আবার ভূতুড়ে অনলাইন গেম ৷ আর সেই গেমের আসক্তি থেকেই নাকি কিশোরের রহস্যমৃত্যু ৷ বন্ধ ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে 14 বছরের সাগ্নিক নস্করের ৷ সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার বারুইপুরের দত্ত পাড়ায় ৷ পুলিশ কিশোরের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে ৷ তার মৃত্যুর পিছনে কী কারণ, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
ভূতুড়ে অনলাইন গেমের আসক্তি থেকে কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগ ৷ (ইটিভি ভারত) 2017 সালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ব্লু হোয়েল নামে অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে একের পর এক কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুর খবর উঠে এসেছিল ৷ এ যেন তারই প্রতিচ্ছবি ৷ সাগ্নিক নস্করের বাবা বিদ্যুৎ নস্কর পেশায় আইনজীবী ৷ তিনি জানাচ্ছেন, নতুন বাড়িতে এসি ছিল না ৷ তা সত্ত্বেও সারাক্ষণ ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখত সে ৷ এমনকি ঘরের আলো জ্বালাত না সাগ্নিক ৷ আর সব সময় কম্পিউটার ও মোবাইলে অনলাইনে গেম খেলত ৷ পাবজি, ফ্রি-ফায়ার ছাড়াও একটি ডেমন গেম খেলত সে ৷ আর সেই গেমের কভার ইমেজ কম্পিউটারে সেভ করে রাখা ছিল ৷ মাঝে মধ্যেই সেই গেমটি খেলতে নবম শ্রেণির সাগ্নিক ৷
এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই তাঁর মা মামনি নস্কর তাঁকে বকাবকি করতেন ৷ বিদ্যুৎ নস্কর ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন ৷ ঘরের জানালা-দরজা খুলতে বলতেন ৷ কিন্তু, কোনও কথাই শুনত না সে ৷ বিদ্যুৎবাবু বলেন, "ছেলে সব সময় মোবাইল ও কম্পিউটারে ভূতের গেমে ব্যস্ত থাকত। একটা সময়ে মোবাইল কেড়েও নিয়েছিলাম আমি ৷ তার পরেও খেলা বন্ধ করতে পারিনি ৷ সোমবার বাজারে গিয়েছিলাম, বাড়ি ফিরে দেখি দোতলার ঘর বন্ধ ৷ ডাকাডাকি করেও সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভাঙা হয় ৷ ঘরে ঢুকে দেখি সিলিং থেকে দেহ ঝুলছে ৷ ছেলে যে এ কাজ করবে, ভাবতে পারিনি ৷"
পরিবারের দাবি, সাগ্নিক নস্কর আত্মঘাতী হয়েছে ৷ তবে, এর পিছনে অনলাইন গেমের কোনও প্রভাব সত্যিই আছে কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষ ৷ তাই এখনই পুলিশ এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করছে ৷ সেই সঙ্গে সাগ্নিকে মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৷ সেগুলি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে ৷ তারপরেই 14 বছরের কিশোরে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনও ধারণা পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা ৷