কলকাতা, 19 জুন:দক্ষিণবঙ্গে বেশ কয়েকটি জেলায় ইতিমধ্যেই হালকা বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে ৷ ভারী বৃষ্টি না-হলেও বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে । কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলের আকাশ মেঘলা থাকবে আজ। আগামী কয়েকদিন কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে ৷
আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস (ইটিভি ভারত) মৌসুমী বায়ু আগামী তিন চারদিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের কিছু কিছু জেলায় প্রবেশ করবে । তার জেরেই 24 ঘণ্টা পর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে। অনেক জেলাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ষা প্রবেশের আগে এটাই প্রাক বর্ষার বৃষ্টি বলে জানানো হয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে। নিম্নচাপের প্রভাবে মৌসুমী বায়ু আপাতত প্রবেশ করছে না । তাই ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই । হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে ৷ এমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস।
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও আগামি 24 ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে । উত্তরের 5 জেলা আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং ও কালিম্পঙে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর ।
প্রসঙ্গত, গত 24 ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের ওপরের 5 জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে সর্বত্রই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। এমনকি ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিও হয়েছে। যদিও উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি বেশ কিছুদিন ধরে চলছে ৷ আগামী কয়েক দিন এই পরিস্থিতি চলবে ৷ গত 24 ঘণ্টায় কোচবিহারের মাথাভাঙায় 213 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে । কুমারগ্রামে 155.4 মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে । এই রকম ভাবে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়েছে । দক্ষিণবঙ্গে কয়েকটি জেলায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করলেও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের দেরী কেন ?
এই বছর কেরলে বর্ষা প্রবেশের কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছিল। তার এক সপ্তাহ বা আরও কয়েকদিন পরেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে। তবে এই ব্যবধান কখনও কম কখনও বেশি হয়। যেমন, 2022 সালের 3 জুন বর্ষা উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছিল, আর দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছিল 18 জুন ৷ আবার 2023 সালে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করেছিল 12 জুন । দক্ষিণবঙ্গে সে বছর বর্ষা প্রবেশ করেছিল 19 জুন । তাই বর্ষা প্রবেশের ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে পার্থক্য খুব একটা অস্বাভাবিক নয় বলেই মনে করছে আলিপুর হাওয়া অফিস ।
পশ্চিমের জেলাগুলিতে আগামি তিনদিনে তাপমাত্রা 2-4 ডিগ্রি কমতে পারে। কলকাতায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে দুই ডিগ্রি বেশি রয়েছে। বায়ুমণ্ডলের নীচু স্তরে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় আর্দ্রতা জনিত অস্বস্তিকর গরম বোধ হচ্ছে । তবে বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হলেই এই অস্বস্তিকর গরম কমে যাবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস ৷
মঙ্গলবার কলকাতা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 35.3 ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে 1.5 ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 30.4 ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে 3.4 ডিগ্রি বেশি। বাতাসে সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বোচ্চ 92 শতাংশ, সর্বনিম্ন 71 শতাংশ। আজ বুধবার, দিনের আকাশ মেঘলা থাকতে পারে । কয়েকটি জায়গায় বজ্রবিদ্যুত-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে । দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 34 ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন 29 ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকবে ।