মালদা, 15 এপ্রিল: ব্যবধানটা মাত্র 32 দিনের ৷ একই বাড়িতে দ্বিতীয়বার কান্নার শব্দে ভারি হয়ে উঠল বাতাস ৷ পেটের জ্বালা 32 দিনের মধ্যে কেড়ে নিল দুই ভাইকে ৷ ভোটের বাজারে আরও একবার প্রশ্ন তুলে দিল মালদার পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা ৷ কোনও রাজনৈতিক দল কি এই শ্রমিকদের যথার্থ দিশা দিতে পারবে ? নাকি রাজনীতির পাঁকে এভাবেই একের পর এক তরতাজা জীবন বলি হতে থাকবে ৷ প্রশ্নটা কিন্তু উঠেই যাচ্ছে ৷
মালদার রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ফরিদপুর গ্রাম ৷ বর্ধিষ্ণু এই গ্রামের প্রায় সবাই পরিযায়ী শ্রমিক ৷ গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান শক্তি থাকাকালীন ভিনরাজ্যে কাজ করতেন ৷ পরবর্তীতে তাঁর পাঁচ ছেলেও সেই রাস্তায় নেমে পড়েন ৷ কারণ, অভাবের সংসারে বাইরে কাজে না গেলে পেটের দানা জোগাড় হবে না ৷ সেই অভাবই 32 দিনের ব্যবধানে কেড়ে নিয়েছে তাঁর দুই ছেলেকে ৷
গত 13 মার্চ রাতে বাজার করতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর ছোট ছেলে, 32 বছর বয়সী সরিফুল হক ৷ রবিবার একই কাজে গিয়ে টাওয়ার থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বড় ছেলে, 35 বছরের আজহারউদ্দিন হকের ৷ দুই ঘটনাই ঘটেছে ছত্তিশগড়ের রায়পুরে ৷ সোমবার রাতের মধ্যে আজহারউদ্দিনের মৃতদেহ ঘরে ফিরে আসার কথা ৷
পেট ভরানোর দাম যে এত, ভাবতে পারেননি হাসনারা বিবি ৷ আনিসুরের স্ত্রী ৷ এক মাসের ব্যবধানে পাঁচ ছেলে যে তিনে নেমে আসবে কল্পনাতেও ছিল না তাঁর ৷ তিনি বলছেন, “হোলির আগের দিন বড় ছেলে আজহার ছত্তিশগড়ের রায়পুরে টাওয়ারের কাজে গিয়েছিল ৷ গতকাল দুপুরে টাওয়ারের তার ছিঁড়ে উপর থেকে নিচে পড়ে যায় ৷ সঙ্গে সঙ্গেই মরে গিয়েছে ৷ ওখান থেকে টাওয়ার মিস্ত্রি ফোন ওর বাবাকে বলেছে, তোমার ছেলে মরে গেল ৷’’