মেদিনীপুর, 16 জানুয়ারি: প্রসূতিদের মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার পর ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের স্যালাইনে মিলল ছত্রাক ৷ কাঠগড়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ৷ মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচ অসুস্থ প্রসূতির মধ্যে একজনের মৃত্য হয়েছে আগেই ৷ বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় এক অসুস্থ প্রসূতির সদ্যোজাতের ৷ এই ঘটনায় বামেদের বিক্ষোভে উত্তাল হল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ৷
বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই এই ঘটনায় এদিন মেদিনীপুর মেডিক্যালে সুপারের ঘরে বসে বিক্ষোভ দেখান ৷ সে সময় সুপার ছিলেন না ৷ তাঁকে না-পেয়ে অতিরিক্ত সুপার পবিত্র মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বামেরা ৷ বিক্ষোভে অসুস্থবোধ করেন তিনি ৷ পুলিশ বাহিনী বিক্ষোভ হটিয়ে দেওয়ার আগে অসুস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিককে ছত্রাক ভর্তি সেই স্যালাইন দেওয়ার দাবি জানান বামেরা।
বামের বিক্ষোভে উত্তাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল (ইটিভি ভারত) এই নিয়ে ডিওয়াইএফআই নেতা সুমিত অধিকারী বলেন, "আমরা জানতে এসেছিলাম সেদিনের স্যালাইন-কাণ্ডে কারা দোষী তাদের কি শাস্তি হবে ? এসে জানতে পারি সরকার থেকে সরকার থেকে নিষিদ্ধ হওয়া সেই স্যালাইন আজকেও দেওয়া হচ্ছে প্রসূতিদের। আমরা এই ঘটনার পুরোপুরি তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ৷ আমাদের আন্দোলনে যদি হাসপাতালের কোনও আধিকারিক অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁকেও সেই ছত্রাকযুক্ত স্যালাইন দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।"
মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্য়ালাইন কাণ্ডে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এদিন স্বীকার করে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যা ৷ সাংবাদিক বৈঠকে স্যালাইন কাণ্ডে প্রসূতি ও শিশু মৃত্য়ুর ঘটনায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুপার-সহ 12 জনকে সাসপেন্ড করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
সাসপেন্ড হওয়া 12 জনের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত রাউত এবং আরএমও ৷ এছাড়াও মাতৃমা বিভাগে ইউনিট 1সি-র বেড ইনচার্জ দিলীপ পাল, সিনিয়র চিকিৎসক হিমাদ্রি নায়েক, আরএমও সৌমেন দাস, অ্যানেস্থেসিস্ট পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়, পিজিটি প্রথম বর্ষের চিকিৎসক মৌমিতা মণ্ডল, পূজা সাহা, ইন্টার্ন চিকিৎসক সুশান্ত মণ্ডল, পিজিটি তৃতীয় বর্ষের চিকিৎসক জাগৃতি ঘোষ, ভাগ্যশ্রী কুন্ডু, পিজিটি প্রথম বর্ষের অ্যানেস্থেসিস্ট মণীশ কুমার, বিভাগীয় প্রধান মহম্মদ আলাউদ্দিন ৷ চিকিৎসক দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই দিন হাসপাতালের বাইরে অস্ত্রোপচার করছিলেন। বাকিদের কাজে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
পাশাপাশি স্যালাইন-কাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু 5 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ যদি তাঁদের পরিবারের কেউ চাকরি করতে চান, তবে একজনকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টিও সরকার ভেবে দেখবে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপস্থিতিতেই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, "অস্ত্রোপচারের সময় স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিভ প্রসিডিওর মানতে হয়, এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি ৷"