পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

স্বামীর কিডনি বিক্রিতে জোর! টাকা-গয়না নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে চম্পট দিলেন স্ত্রী - WIFE FLEE WITH MONEY SELLING KIDNEY

ভবিষ্যতে মেয়ের বিয়ের কারণে স্বামীর কিডনি বিক্রিতে জোর দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ৷ এরপর কিডনি বিক্রির টাকা নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেলেন তিনি ৷

WIFE FLEES WITH LOVER
স্বামীর কিডনি বিক্রির টাকা নিয়ে পালাল স্ত্রী (প্রতীকী ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 1, 2025, 10:24 PM IST

সাঁকরাইল, 1 ফেব্রুয়ারি: সংসারের অনটন সামলাতে কিডনি বিক্রি করেন হাওড়ার সাঁকরাইলের এক ব্যক্তি ৷ সেই টাকা হাতিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গেলেন ওই ব্যক্তির স্ত্রী ! এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সাঁকরাইলে ৷ বছর ঊনচল্লিশের ওই ব্যক্তি এই অভিযোগ জানিয়ে স্ত্রীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ।

নাবালিকা কন্যার বিয়ে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন ওই দম্পতি ৷ তাঁর ভবিষ্যতের জন্য এখন থেকে গয়না করিয়ে রাখা প্রয়োজন ৷ এই কথা বারবার বলে জবরদস্তি স্বামীকে একটা কিডনি বিক্রিতে বাধ্য করেন স্ত্রী সুপর্ণা বেজ ৷ এরপর কিডনি বিক্রির নগদ টাকা এবং নগদের কিছুটা দিয়ে কেনা গয়না নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে বেপাত্তা হয়ে যান 33 বছরের স্ত্রী ! এমনই অভিযোগ ওই পিন্টু বেজ নামে ওই ব্যক্তির।

টাকা গয়না নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে চম্পট দিলেন স্ত্রী (ইটিভি ভারত)

হাইকোর্টের দ্বারস্থ স্বামী

জানা গিয়েছে, স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার পর স্বামী থানায় মিসিং ডায়েরি করেন ৷ তারপর স্ত্রীকে খুঁজে পেতে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা করেন ৷ এক্ষেত্রে মামলাকারীর স্ত্রীকে খুঁজে এনে আদালতে হাজির করানোর কথা ৷ যদিও হেবিয়াস কর্পাস মামলায় পুলিশের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তদন্তকারীদের কাছে ওই মহিলা লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন ৷

পুলিশের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, প্রেমিকের সঙ্গে ওই মহিলা বর্তমানে স্বামী-স্ত্রীর মতো বাস করছেন ৷ কেউ তাঁকে জোর করে কিছু করায়নি ৷ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ গত 27 জানুয়ারি হেবিয়াস কর্পাস মামলাটি খারিজ করে দেয় ৷

আদালতের বক্তব্য, যেহেতু মহিলার হদিশ পাওয়া গিয়েছে এবং তিনি স্বেচ্ছায় স্বামীকে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, তাই এক্ষেত্রে আর হেবিয়াস কর্পাসের আবেদন কার্যকর হবে না ৷ এদিকে এরপর নিজের কিডনি বিক্রির টাকা স্ত্রীর কাছ থেকে আদায় করতে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।

আইনজীবীরা কী বলছেন ?

স্বামীর অভিযোগ, গত 23 ডিসেম্বর সকালে বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে সাঁকরাইলের মহিলা আর বাড়ি ফেরেননি । আইনজীবীদের বক্তব্য, গোটা ঘটনায় কিডনি বিক্রি করে টাকা পাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে ৷ যা আইনত দণ্ডনীয় ৷ সেক্ষেত্রে 39 বছর বয়সি ওই ব্যক্তিও বেআইনি কাজে অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন ৷ আইনজীবীদের আরেকটি অংশের অভিমত, মামলাকারীকে প্রথম থেকে ভুল বুঝিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ৷ সুতরাং, এখানে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা ওই ব্যক্তিকে ঘটনার শিকার বলে ধরে নেওয়ার যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে ৷

গত অক্টোবরে একজন রোগীর কথা জানিয়ে তাঁকে কিডনি বিক্রি করতে স্বামীকে জোর দেন তাঁর স্ত্রী ৷ তারপর পাঁচ লক্ষ টাকা ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে এবং প্রায় দু’লক্ষ টাকা তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে আসে ৷ এক্ষেত্রে আইনজীবীদের দাবি, স্বামীকে প্রথমে ভুল বুঝিয়ে তাঁর কিডনি বিক্রিতে একরকম বাধ্যই করেন তাঁর স্ত্রী ৷ কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের আইনজীবী রানা মুখোপাধ্যায় পুলিশকে দেওয়া ওই তরুণীর মুচলেকার কপি পেশ করেছেন ৷

পরিবার কী বলছে ?

পিন্টু জানিয়েছেন, সুপর্ণার সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম দিকে পরিবারে কোনও সমস্যা ছিল না। পরে কিডনি বিক্রি নিয়ে দু'জনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। পিন্টুর অভিযোগ, এই ব্যাপারে শুরু থেকেই তাড়া দিতেন স্ত্রী। কিডনি বিক্রির অগ্রিম টাকা আসার পর বাকিটা আসতে বেশ খানিকটা সময় লাগছিল। সে সময় সুপর্ণা অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। পাশাপাশি স্ত্রী নগদ টাকা নিয়ে গিয়েছেন বলে লেনদেনের কোনও প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছেন স্বামী। পিন্টুর মা জানান, কিডনি বিক্রির কথা জানতে পেরে পরিবার সকলকেই আপত্তি করেছিল। কিন্তু স্ত্রীর চাপে একপ্রকার বাধ্য হয়েই এমন কাজ করতে জয়ন্ত বাধ্য় হন।

ABOUT THE AUTHOR

...view details