জলপাইগুড়ি, 3 এপ্রিল: ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার অনুমতি চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, চা শ্রমিক ও ঝড়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে ফের কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী ৷ চালসাতে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, "সরকার তো মেশিন নয়। সবার কাছে ত্রান পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে। কিছু দূরে দূরে আছেন। কেউ আবার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আছেন । ত্রাণ থেকে কেউ কোনওভাবেই বঞ্চিত হবেন না। আর বাড়ি তৈরি করে দিতে আমি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখেছি। অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে যাতে বাড়ি ঘর তৈরি করে দেওয়া যায়।"
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু চা শ্রমিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন ৷ তিনি বলেন, "এখানে প্রায় 10 লক্ষ চা শ্রমিক আছেন ৷ পাঁচ বিঘে পর্যন্ত তাঁদের জমির সীমানা ৷ অন্য অন্য চা বাগানের সীমানা আড়াইশো একর, পাঁচশো একর হয়ে থাকে ৷ এরা নিজেদের চা পাতাটা নিজেরাই তৈরি করেন ৷ তারপর সেটা বিক্রি করেন ৷ এইভাবেই তাঁদের চলত ৷ কিন্তু 2015 সালে কেন্দ্রীয় সরকারের টি-বোর্ড একটা নির্দেশ দেয় যেখানে বলা হয়, এতে কিছু পোকামাকড় আছে ৷ ফলে সেই চায়ের চাষ বন্ধ হয়ে যায় ৷"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কিন্তু পরে আমরা খবর নিয়ে জানলাম, এদের কোনও সময় দেওয়া হয়নি ৷ কী পোকা সেটা বিস্তারিত জানানো হয়নি ৷ এই চা শ্রমিকদের জানতেই দেওয়া হয়নি আসলে কী ঘটনা ঘটেছে ৷ কেন এরা ভিকটিমস হচ্ছেন ৷ এর ফলে 10 লক্ষ চা শ্রমিক যে পাঁচ বিঘে জমিতে চা পাতা চাষ করত তা বন্ধ হয়ে যায় ৷ এখন তাঁরা বেকার ৷ আমি সবটা শুনেছি ৷ অনুরোধ করেছি শ্রমিকদের যাতে কাজ বন্ধ না করেন ৷ কেন এই সমস্যা হচ্ছে সেটা আমরা রিসার্চ করে, বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচনের পরে সমধানের পথ বের করা হবে ৷ বটলিফ প্ল্যান্টের কাছে আমার আবেদন থাকবে সবটাই সংশোধন করার একটা সুযোগ দেওয়া হোক। ভোটের পর প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রশাসনকে অনুরোধ করব বটলিফরা যাতে চা পাতা কেনা বন্ধ না করে।"
মূলত, জানা যায়, চা বাগানে পোকা মারার জন্য চা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াও বেশ কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হত ৷ এতে চায়ের গুণগত মান কমে যাচ্ছে। তাই চা পর্ষদ গাছে ওষুধ স্প্রে করার জন্য নির্দিষ্ট ওষুধের নাম বলে দিয়েছে। এর বাইরে স্প্রে করলে পরীক্ষায় ধরা পড়লে চা পাতা বাতিল করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ৷ তাতেই সমস্যায় পরেছেন জেলার ক্ষুদ্র চাষীরা। এদিন জেলার চা চাষীরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চালসাতে দেখা করে তাঁদের সমস্যার কথা জানান।