কলকাতা, 16 অগস্ট: আরজিকরের ঘটনার পর কেন্দ্রের শাসক বিজেপিতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কড়া সমালোচনা করছেই। বিরোধী শিবিরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলিও এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধি আরজিকর নিয়ে মুখ খুলেছেন। এরপর আজ অর্থাৎ শুক্রবার আরজিকর কাণ্ড নিয়ে রাজপথে নেমে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে এক সারণীতে এনে পালটা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন আরজিকর কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী। মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের পর সেখানেই ছোট সভা করেন তিনি। এই সভা থেকেই জোট বন্ধু কংগ্রেস এবং কেন্দ্রের শাসনে থাকা বিজেপিকে সমালোচনা শোনা যায় মমতার মুখে।
এদিন কংগ্রেস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাৎপর্যপূর্ণভাবেই জানিয়েছেন, "এই রাজ্যে বিজেপির হাতে তামাক খাচ্ছে কংগ্রেস, সিপিএম সবাই।" যদিও সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপির "অলিখিত জোট" নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই এদের জোটকে "জগাই মাধাই গদাই" বলে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
শুক্রবার আরও একবার এই নিয়ে আক্রমণ শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, "এমনটা যে হতে পারে আমি ভেবে পারি না। আমরা তো ইন্ডিয়া টিমের বন্ধু হিসেবে তোমাদের খুব সাপোর্ট দিই। কই তুমি তো উন্নাও-এর ঘটনা নিয়ে কথা বলো না। তুমি হাথরস শুনে চুপ থাকো। যখন মনিপুরে নির্বাচন হয়, তুমি মিটিং করতে যাও। তবে যখন তারা বিপদে পড়ে, তুমি যাও না । আসামে যখন এনআরসি হয়, মানুষ বিপদে পড়ে তখন তোমাদের দেখা পাওয়া যায় না। আমরা কিন্তু প্রত্যেক ক্ষেত্রেই গিয়েছি। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আমার টিম পাঠিয়েছি। এটা একমাত্র আমরাই করতে পারি।উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট আমাদের শেখাতে হবে না ৷ আমরাই একমাত্র দল, যারা ভারতবর্ষের সংসদে 38 শতাংশ মহিলা সাংসদ পাঠিয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা, ঘটনার পর থেকেই আমরা এই ঘটনার কড়া নিন্দা করছি । দোষীদের শাস্তি, ফাঁসি পর্যন্ত চেয়েছি আমরা ।"
এদিন, এই মঞ্চ থেকেই বিজেপিকেও এক হাত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককেও নিশানা করেছেন তিনি। তার কথায়, "আমাকে নকল করবেন ক্ষতি নেই, কিন্তু বিজেপি নিজের দিকে দৃষ্টি দিক। নিজেদের ক্ষতগুলি আগে সারান।"
কেন্দ্রীয় হোম সেক্রেটারির উদ্দেশ্যে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কোনও কিছু ঘটলেই আমাদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠান। আমরা এগুলি সামলাতে পারি। আশা করি বাংলাদেশের অশান্তির পরে কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি, বুঝতে পেরেছেন! আমরা হিন্দু, মুসলমান সব সম্প্রদায়কে শান্ত রেখেছি। কেউ কোনও অশান্তি করেনি। তিনি বলেন লজ্জা করে না, সাত দিনের মধ্যে পাল্টি খেয়ে গেলেন? কেন আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের থেকে শুনতে হবে, ইন্ডিয়া যেন আমাদের কাজে ইন্টারফেয়ার না করে। এমনটা কখনওই হয়নি। এই প্রথম আপনাদের আমলে আমাদের শুনতে হচ্ছে। চ্যারিটি বিগেন্স অ্যাট হোম। আয়নায় আগে নিজেদের মুখ দেখুন। আপনারা কি মনিপুর সামলাতে পেরেছেন? নাগাল্যান্ড সামলাতে পেরেছেন? আসাম সামলাতে পেরেছেন? বিহার সামলাতে পেরেছেন? উত্তরপ্রদেশ সামলাতে পেরেছেন? মিথ্যে কথা বলতে বলতে চিরকাল মিথ্যাটা সত্য হয় না। তাই যতই নাটক করুন, যতই ইচ্ছা করুন বা ফেক ভিডিও ছাড়ুন। বাংলার মানুষ আপনাদের সমর্থন করবেন না।"