কলকাতা, 29 নভেম্বর: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে ৷ অগস্টে হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে আসার পরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি ৷ বরং উত্তরোত্তর বাড়ছে ৷ বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ও সনাতনী নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ইস্যুতে ফের জ্বলছে বাংলাদেশ ৷ কাঠগড়ায় সেদেশের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় ৷ মৌলবাদীদের মদতেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ ৷
ভারত সরকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ৷ পাশাপাশি বাংলাদেশ লাগোয়া ভারতের যে রাজ্যগুলি রয়েছে, সেখানকার পুলিশ-গোয়েন্দারাও এই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে ৷ ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও ৷ কারণ, বাংলাদেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে পাচারচক্র ও জঙ্গি সংগঠনগুলি ফের মাথাচাড়া দিতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা ৷ তেমনটা হলে সেই পাচারচক্র ও সন্ত্রাসবাদের জাল সীমান্তের এপারেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন ৷
বৃহস্পতিবার সকালেই ধর্মতলা থেকে জালনোট-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ ৷ সেই ব্যক্তির কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ভারতীয় টাকার হিসেবে তিন লক্ষ টাকা মূল্যের জালনোট উদ্ধার হয় ৷ সেই জালনোট বাংলাদেশ থেকে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা ৷ এই আশঙ্কা যে আগে থেকেই লালবাজারের শীর্ষকর্তাদের কাছে ছিল, তা স্পষ্ট হয়েছে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত নগরপাল (5) ও বর্তমানে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ-এর দায়িত্বে থাকা আইপিএস ভি সলেমন নেশাকুমারের কথায় ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, "আমাদের কাছে এই রকম খবর রয়েছে যে একাধিক জালনোট কারবারী বাংলাদেশে জালনোট বানিয়ে, তা এই রাজ্যে প্রবেশ করাতে চাইছে ।’’
শুধু জালনোট নয়, জঙ্গি সংগঠনগুলোর স্লিপার সেলগুলিও ফের সক্রিয় হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা ৷ কারণ, জামা'আতুল মুজাহিদিন (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ (হুজি), আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এটিবি), শাহাদত-ই-আল হিকমা ও হিযবুত তাহ্রীর মতো বাংলাদেশের একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছে ৷ আর এক্ষেত্রে তাদের মূল মদতদাতা পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই, এমনটাই মনে করছেন ভি সলেমন নেশাকুমার ৷
ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গুপ্তচর আইএসআই জঙ্গি সংগঠন এই রাজ্যে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে বিভিন্ন কাজ শুরু করেছে । মূলত, পাকিস্তানের আইএসআই জঙ্গি সংগঠনগুলি বাংলাদেশের একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলায় তাদের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে ।’’
সম্প্রতি গুজরাত থেকে ধরা পড়া বেশ কয়েকজন আল কায়দা জঙ্গি নিউমার্কেট ও বেনিয়াপুকুর এলাকায় আত্মগোপন করেছিল বলে এনআইএ তদন্তে উঠেছে ৷ ওই জঙ্গিরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক ৷ এই ঘটনায় বেনিয়াপুকুর-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায় এনআইএ ৷ সেখানেও প্রতিবেশী দেশের গুপ্তচর সংস্থার মদতের তথ্যই সামনে আসে বলে এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে ৷ সেকথা এনআইএ-র তরফে কলকাতা পুলিশকেও জানানো হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর ৷