কলকাতা, 13 অগস্ট:আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর ঘটনাস্থলে আসল, রাজ ওরফে ক্যাম্ফর ও সূর্য । এরা শরীরে পুলিশি পোশাক পড়ে না । কিন্তু, সারাদিন কঠিন পরিশ্রমে পারদর্শী এবং কড়া ডায়েটে থাকে 'ফিট' থাকার জন্য । প্রবল ঘ্রাণ শক্তির সঙ্গে অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর নিখুঁত অনুসন্ধান কৌশল এদের পুলিশ বাহিনীতে অপরিহার্য করে তুলেছে । এরা আর কেউ নয় বরং আরজি কর কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের "সিট" সদস্যদের সাহায্যকারী কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর দুটি উজ্জল মুখ "রাজ" এবং "সূর্য"।
প্রথমেই আসা যাক কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর সদস্য রাজ ওরফে ক্যাম্ফরের প্রসঙ্গে । কে এই রাজ ? জানা গিয়েছে, রাজ ওরফে ক্যাম্ফর ল্যাবব্রাডর প্রজাতির কুকুর । কলকাতা পুলিশের এক একটি সারমেয় এক এক দিকে পারদর্শী । কেউ বোমা খোঁজায় সিদ্ধহস্ত, আবার কেউ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে খুনিকে চিনতে পারদর্শী ।
যেমন, রাজ ওরফে ক্যাম্ফর। মৃতদেহের সামনে গিয়ে আনুবিক্ষনিক তথ্য প্রমান সংগ্রহ ও আততায়ীর গতি-প্রকৃতি খুঁজে পেতে বেশ পারদর্শী এই রাজ। শুধু আরজি কর হাসপাতালে নয়, এর আগেও কলকাতার বুকে ঘটে যাওয়া একাধিক খুনের ঘটনা থেকে শুরু করে, আততায়ীর গতি-প্রকৃতি খুঁজে লালবাজারের কর্তাদের মন জয় করেছিল রাজ ওরফে ক্যাম্ফর।
এর আগে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ আবাসন ভেঙে পড়ার ঘটনায় একেবারে শেষ পর্যায় যখন ভেঙে পড়া ধ্বংস স্তুপ এর সিমেন্টের চাঁইয়ের তলায় দেহ আছে কিনা, কেউ সন্ধান দিতে পারেনি। সেই সময় সেই প্রবল ধ্বংসস্তুপের নীচে তখনও দেহ চাপা পড়ে আছে বলে ল্যাজ নেড়ে ও নিজের স্বাভাবিক বডি ল্যাঙ্গুয়েজে পুলিশের উদ্ধারকারী দলকে বুঝিয়ে দিয়েছিল এই রাজ ওরফে ক্যাম্ফর। প্রায় তিন বছর ধরে সে সাফল্যের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীতে কাজ করছে। তার এই পারদর্শিতার জন্য কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পদস্থকর্তাদের অত্যন্ত পছন্দের হল এই রাজ ওরফে ক্যাম্ফর।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশন অনিচ্ছুক রাজ'কে সারাদিন কন্ট্রোল করা এক পুলিশ কর্মী বলেন, রাজের জন্য কলকাতা পুলিশে বরাদ্দ রয়েছে মেডিকেল লিভ। তার শরীর অসুস্থ হলে সে সরকারি কর্মীদের মতো ছুটি পায়। আর তাদের ডায়েট একেবারে কড়া। সকালে উঠেই খালি পেটে ওষুধ এবং শাকসবজি। এরপর পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে মাঠে সামান্য দৌড়াদৌড়ি। পরে অফিসে হ্যান্ডেলারের থেকে অন্তত 10 থেকে 20 মিনিট আদর মাস্ট। আদর করার পর ভালো বিশেষ চিরুনি দিয়ে তাদের শরীরের লোম ভালোভাবে আচঁরে দিতেই হবে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলে কড়া ডায়েট। তবে, চিনি ও নুন একদম নয়। পরে যখন যেমন ডিউটি, তখন তেমন কাজ করতে হয় এদের । জানা গিয়েছে, যখন যেমন প্রয়োজন, তেমন ভাবে ঘটনাস্থলে সেই ভাবে পাঠানো হয় রাজ ওরফে ক্যাম্ফর।
অন্যদিকে কলকাতা পুলিশের সারমেয় বাহিনীর অপর একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলো সূর্য। এই সূর্য কলকাতা পুলিশে মার্ডার ডিটেকশন কর্মরত। লালবাজারে একাধিক কর্তারা দাবি করছেন যে, শহরের বুকে ঘটে যাওয়া একাধিক খুনের ঘটনার কীরারা করতে রাজ, এর পাশাপাশি সূর্যর ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জানা গিয়েছে, সূর্য হল জার্মান শেফার্ড প্রজাতির কুকুর । সূত্রের খবর, আইটিবিপির কাছ থেকে প্রায় আট মাসের কঠিন প্রশিক্ষণ নিয়ে কলকাতা পুলিশে কর্মরত সূর্য ।