কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: প্রেমের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার খেসারত ! কলকাতার কাশীপুর থানা এলাকার প্রামাণিক ঘাট রোডের বাসিন্দা এক তরুণীর অভিযোগ শুনলে তেমনটা মনে হতে বাধ্য ৷ ওই তরুণীর দাবি, সম্পর্ক ছিন্ন করার পর থেকেই হুমকি দিচ্ছিল অমিত চক্রবর্তী নামে ওই যুবক ৷ শনিবার পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায় ৷ ধারালো অস্ত্র নিয়ে একেবারে বাড়িতে হামলা করতে চলে আসেন অমিত ৷ তরুণীর শ্লীলতাহানিও করেন ৷
এর পরই কাশীপুর থানার দ্বারস্থ হন ওই তরুণী ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হয় অমিত চক্রবর্তীকে ৷ এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "পুরো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ । এই ঘটনায় যুক্ত একাধিক ব্যক্তির বয়ান রেকর্ড করছি আমরা । একটা সিদ্ধান্তে আসার পরেই আরও বিস্তারিতভাবে বলতে পারব ৷"
শনিবার কী ঘটেছিল ?
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার সন্ধ্যা 7টা নাগাদ ওই তরুণীর বাড়ির সামনে পৌঁছান অমিত ৷ তিনি তখন মত্ত অবস্থায় ছিলেন ৷ শুরুতে বাড়ির বাইরে থেকে তরুণীকে গালিগালাজ করতে থাকেন ৷ সেই সময় বাড়ির বাইরে কোনও কাজের জন্য বের হচ্ছিলেন ওই তরুণী ৷ বাইরে আসতেই অমিত তাঁর হাত চেপে ধরে ৷
লালবাজার, কলকাতা পুলিশের সদর দফতর (ফাইল চিত্র)
পুলিশ ওই তরুণী, তরুণীর পরিবার ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে যে অমিত হাত ধরে টানাটানি শুরু করতেই ওই তরুণী চিৎকার শুরু করেন ৷ তখন বাইরে আসেন তাঁর দাদা ৷ সেই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানো শুরু করে অমিত ৷ তরুণীকে খুনের হুমকিও দেয় ৷ এই পরিস্থিতিতে সেখানে চলে আসেন পাড়া-প্রতিবেশীরাও ৷ তখনই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান অমিত ৷ পরে তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
তরুণী পুলিশকে কী জানিয়েছেন ?
পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণীর দেওয়া বয়ান থেকে জানা গিয়েছে যে অমিতের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ৷ সেই সম্পর্কের গভীরতা এতটাই ছিল যে দু’জন দু’জনের বাড়িতেও যাতায়াত করতেন ৷ বছরখানেক আগে অমিতের সঙ্গে ব্রেক-আপ করে নেন ওই তরুণী ৷ তার কারণ অমিত প্রায়ই তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন ৷
তরুণীর অভিযোগ, ব্রেক-আপের পর তিনি অমিতকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দেন ৷ সেই কারণে বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দিতেন অমিত ৷ অশালীন কথাও বলতেন ৷ অমিতের কাছে ওই তরুণীর কিছু ছবি ছিল ৷ সেই ছবিও অমিত তরুণীর পরিচিত-বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দেন ৷ ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকিও দেন ৷ তাঁকে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার চেষ্টাও করেন ৷
এই বিষয়ে অমিত বা অমিতের পরিবারের কারও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ পুলিশি জেরায় অমিত কী বলেছে, তা নিয়েও তদন্তকারীরা মুখ খুলতে নারাজ ৷ ফলে এই ঘটনায় তরুণীর বয়ানের সত্যতা কতটা, অমিতই কতটা অভিযুক্ত, তা জানতে পুলিশি তদন্ত শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতেই হবে ৷