কলকাতা, 18 এপ্রিল: দেশের মধ্যে প্রথমবার নদীর নীচ দিয়ে মেট্রো চালিয়ে গত 15 মার্চ ইতিহাস গড়েছে শহর কলকাতা । হুগলি নদীর নীচ দিয়ে দৌড়য় মেট্রো। আর এখন প্রতিদিন গাদাগাদি ভিড় হয় এই রুটে । অন্যদিকে বয়সের ভারে যেন ধুঁকছে দেশের সবচেয়ে প্রথম মেট্রো রুট কলকাতার নর্থ-সাউথ করিডোর ।
আগে যেখানে হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলা পৌঁছতে সময় লাগত প্রায় 1 ঘণ্টার কাছাকাছি সেখানে এখন মেট্রোয় হাওড়া ময়দান থেকে মহাকরণ মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতে সময় লাগছে মাত্র 5 মিনিট। তাই ধর্মতলা হয়ে অন্যান্য জায়গায় পৌঁছনোর ক্ষেত্রে তাই মেট্রোই এখন যাত্রীদের এক নম্বর পছন্দ । শহরের অন্যান্য মেট্রো রুট যেমন গ্রিন লাইন বা পার্পেল লাইন কিংবা অরেঞ্জ লাইন প্রযুক্তি পরিকাঠামো, যাত্রী পরিষেবা এবং নিরাপত্তার দিক দিয়ে ব্লু লাইনের তুলনায় শতযোজন এগিয়ে। যদিও বাকি রুটগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে নর্থ-সাউথ মেট্রো করিডোরকে প্রতিনিয়ত উন্নত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে তবুও কখনও আত্মহত্যার চেষ্টা আবার কখনও বড়সড় যান্ত্রিক গোলযোগের জেরে নিত্যদিন এই রুটে যাত্রী পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে ৷
তাই শহরের প্রথম মেট্রো পরিষেবা হিসেবে এই রুটের যে চাহিদা ছিল তা এখন অনেকটাই হারাতে বসেছে অন্যান্য রুটের জৌলুসের সামনে। সম্প্রতি গ্রিন লাইনে শিয়ালদা থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত অংশকে আরও উন্নত করা হয়েছে ৷ এই রুটে এবার থেকে অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন (ATO) মুডে মেট্রো চালানো হবে। সপ্তাহের ব্যস্ত দিনগুলিতে অর্থাৎ সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ATO মাধ্যমে মেট্রো চালানো হবে। শনি এবং রবিবার আগের মতোই অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন বা ATP ব্যবস্থায় ট্রেন চালানো হবে। এমনটাই জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ । এর ফলে যেমন বাড়বে যাত্রী নিরাপত্তা তেমনি কমবে যাত্রার সময় ।
এই সব রুটে সিগন্যালিংয়ের ক্ষেত্রে সিবিসিটি ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয় । স্বয়ংক্রিয় ট্রেন অপারেশন সিস্টেমের ক্ষেত্রে চালকবিহীন গাড়ি চালানো যায় । এই ব্যবস্থায় চালককে শুধুমাত্র দরজা বন্ধ করতে হবে । এক কথায় বলতে হলে এই ব্যবস্থায় যদি চালক গাড়িতে নাও থাকে তাহলেও ট্রেন ঠিক নিজের গতি মেপে কোথায় দাঁড়াতে হবে এবং আবার ঠিক কখন ছাড়তে হবে সবটাই নিজেই করতে পারবে । শুধুমাত্র যাত্রীদের মানসিক স্বস্তির জন্যই চালকদের কেবিনে তার উপস্থিতি থাকবে ।
অন্য দিকে প্রায় 40 বছর ধরে চলছে ব্লু লাইন বা নর্থ সাউথ মেট্রো নেটওয়ার্ক ৷ শহরের অন্যান্য মেট্রো নেটওর্য়াকগুলির মতো ঝাঁ চকচকে এবং অত্যাধুনিক মানের না হলেও পরিষেবার দিক থেকে দেশের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন । যদিও অত্যাধুনিক রেক চালু করা থেকে শুরু করে ট্র্যাক সংস্কার এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়গুলিকে আপগ্রেড করা হলেও নিত্যদিন কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই রয়েছে মেট্রোর এই অংশে । এখানে যেহেতু অটোমেটিক স্ক্রিন ডোর ব্যবস্থা নেই তাই অনেকেই নর্থ সাউথ মেট্রোকে আত্মহত্যার জন্য বেছে নেয় । যদিও সতর্কতামূলক অভিযান চালানো হয় কলকাতা মেট্রোরেলের কর্তৃপক্ষের তরফে ।