কলকাতা, 2 অক্টোবর: মহালয়ার মহাসমাবেশ থেকে শুধু রাজ্য সরকার নয়, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধেও হুংকার শোনা গেল জুনিয়র চিকিৎসকদের গলায় ৷ তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, প্রয়োজনে তাঁরা দিল্লি পর্যন্ত যাবেন, সব অমীমাংসিত মামলা খুলবেন । এদিকে, বারবার উত্তরপ্রদেশ বা অন্যান্য রাজ্যের অপরাধের কথা টেনে না-এনে, পশ্চিমবঙ্গকেই মডেল রাজ্য করার পক্ষে সওয়াল করেছেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার ৷
বুধবার দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে আরজি করের চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের মহামিছিল কলেজ স্কোয়্যার থেকে শুরু করে শেষ হয় ধর্মতলায় ৷ এরপর সেখানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে দাবি না-মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ।
তাঁদের তরফে দেবাশিস হালদার বলেন, "আমরা শুধু রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করছি না । আমরা সিবিআইকেও আমাদের কথা বলছি । আমার সিবিআইকে ভরসা করছি না । কারণ আমরা দেখেছি, সিবিআই কেস নেওয়ার পর কতগুলো কেস অমীমাংসিত রয়েছে । কিন্তু আমরা বলে দিলাম, আমরা কোনও সেটিং হতে দেব না । দরকারে দিল্লি যাব । যাঁদের কেসগুলো অমীমাংসিত রয়েছে, তাঁদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করব ।"
মহাসমাবেশে সিবিআইকেও হুঁশিয়ারি দেবাশিস হালদারের (নিজস্ব চিত্র) এদিন কলেজ স্ট্রিট থেকে এমজি রোড, সিআর অ্যাভিনিউ হয়ে ধর্মতলায় রানি রাসমণি রোডে গিয়ে মিছিল শেষ হয় । মিছিলে অংশ নেন বহু সাধারণ মানুষ । রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে মিছিলকে সমর্থন জানান স্থানীয় ও পথচলতিরা । মিছিল শেষে ধর্মতলার মহাসমাবেশের মূল মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখেন অনিকেত কর, কিঞ্জল নন্দ, রুমেলিকা কুমার-সহ অন্যান্যরা । পাশে থাকার জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা । পাশাপাশি তাঁরা তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলেন । জানিয়ে দেন যে, ন্যায় বিচারের দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলন চলবে ৷
এদিনের মিছিলে যোগ দেন অভিনেত্রী সোহিনী সরকার ও উষসী চক্রবর্তীর মতো সেলিব্রিটিরাও ৷ বিভিন্ন নাট্য জগতের মানুষেরা মিলে তৈরি হয়েছে অরাজনৈতিক সংগঠন 'আমরা তিলোত্তমা'। তাদের তরফে মহাসমাবেশে আজ বক্তব্য রাখেন সোহিনী সরকার । তিনি বলেন, "যখন আমরা বারবার প্রশ্ন তুলছি, তখনই বারবার আমাদের উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে । কেন আমরা উত্তরপ্রদেশকে মডেল বানাব ? বরং আমরা পশ্চিমবঙ্গকেই মডেল রাজ্য বানাই না !"
তবে এই ঘটনায় সোশাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করারও নিন্দা করেছেন সোহিনী ৷ তাঁর কথায়, "বারবার বলা হচ্ছে কালীঘাটের ময়না, কিন্তু কেন ? আমরা ওঁর কাজ নিয়ে কথা বলতে পারি । তবে কেন আমরা ওঁকে এমন ভাবে আক্রমণ করছি ।"
এদিকে, আজ ধর্মতলার মহাসমাবেশের জন্য সন্ধে সাতটা পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কর্মসূচি শেষ না-হওয়ায় মহাসমাবেশে আসে পুলিশ । চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের আধিকারিকরা ৷ তাঁদের থেকে আরও কিছুটা সময় চেয়ে নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷