পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

স্ত্রীকে খুনের পর সেপটিক ট্যাংকে দেহ গুম, স্বামীকে ফাঁসির সাজা দিল জলপাইগুড়ি আদালত - DEATH SENTENCE

2019 সালের ঘটনা ৷ আদালতে 18 জন সাক্ষ্য দিয়েছেন ৷ সাড়ে পাঁচবছর পর বিচার পেল নিহতের পরিবার ৷

Death Sentence
স্ত্রীকে খুনের পর সেপটিক ট্যাংকে দেহ গুম, স্বামীকে ফাঁসির সাজা দিল জলপাইগুড়ি আদালত (প্রতীকী ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 10, 2024, 9:20 PM IST

জলপাইগুড়ি, 10 ডিসেম্বর: স্ত্রীকে খুনের দায়ে ফাঁসির সাজা দেওয়া হল স্বামীকে ৷ মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালত এই রায় দিয়েছে ৷

এদিন জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জজ ফোর্থ কোর্ট বিপ্লব রায় যে ব্যক্তি ফাঁসির সাজা দিয়েছেন, তার নাম গোপাল দাস ৷ 2019 সালে বছর তিরিশের এই ব্যক্তি স্ত্রী লতা দাসকে খুন করেছিল ৷

সরকারি আইনজীবী বরেন্দ্রনাথ রায় জানান, গোপাল দাস ডেকরেটর ব্যবসায়ী ৷ সে জলপাইগুড়ির ভক্তিনগর থানা এলাকার তেজপাতা কলোনির বাসিন্দা ৷ 2012 সালে সে একই জেলার পূর্ব চয়নপাড়ার বাসিন্দা লতা দাসকে বিয়ে করে ৷ তবে তাদের সাংসারিক জীবন সুখের ছিল না ৷ শুরু থেকেই স্ত্রীকে সন্দেহ করত গোপাল ৷ সেই নিয়ে একাধিকবার দু’জনের মধ্যে ঝামেলাও হয়েছে ৷

2019 সালের 18 এপ্রিল সেই ঝামেলা চরমে ওঠে ৷ শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপেরবাড়ি চলে যান লতা ৷ গোপালও পরে সেখানে হাজির হয় ৷ যেদিন গোপাল সেখানে যায় পরেরদিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন বছর একুশের তরুণী লতা ৷ গোপাল দাবি করে যে অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়েছে লতা ৷ গোপাল নিজেই ভক্তিনগর থানার অধীনে থাকা আশিঘর ফাঁড়িতে লতার নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে ৷

স্ত্রীকে খুন, স্বামীকে ফাঁসির সাজা দিল জলপাইগুড়ি আদালত (নিজস্ব চিত্র)

লতার বাপেরবাড়ির পাশেই থাকেন মাধবী দাস নামে এক মহিলা ৷ তিনি লতার দাদা বিমল দাসকে জানান, যেদিন লতা নিখোঁজ হয়ে যান বলে গোপাল দাবি করছে, তার আগের রাতে কুয়োতে গোপালকে তিনি কিছু একটা ফেলতে দেখেছেন ৷ বিমলের সন্দেহ হয় ৷ বিমল কুয়োয় খোঁজাখুঁজি করে৷ উদ্ধার হয় লতার একটি শাড়ি ৷ কিন্তু লতার দেহ কুয়ো থেকে উদ্ধার হয় না ৷

কিন্তু বিমলের সন্দেহ হয় যে তাঁর বোনের সঙ্গে খারাপ কিছু হয়েছে ৷ তিনি 21 এপ্রিল পুলিশের কাছে বোনকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ৷ অভিযুক্ত করেন বোনের স্বামী গোপালকেই ৷ পুলিশ তদন্তে নেমে গোপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ সেই জিজ্ঞাসাবাদে সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷

পুলিশ জানতে পারে, গোপালই খুন করেছে লতাকে ৷ রাতের অন্ধকারে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে সে খুন করে স্ত্রীকে ৷ তার পর দেহ ফেলে দেয় সেপটিক ট্যাংকে ৷ এর জন্য ব্যবহার করে ডেকরটার্সের কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু সরঞ্জাম ৷ কেউ যদি কিছু সন্দেহ না-করে সেই কারণেই সে লতার একটি শাড়ি কুয়োয় ফেলে দিয়েছিল ৷ আর সেই কাজই তাকে ধরিয়ে দেয় ৷

পুলিশ গ্রেফতার করে গোপালকে ৷ উদ্ধার হয় লতার বিবস্ত্র দেহ ৷ পুলিশ গোপালের বিরুদ্ধে খুন, তথ্য-প্রমাণ লোপাট, বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করে ৷ সেই মামলায় 18 জন সাক্ষ্যও দেন ৷ প্রায় সাড়ে পাঁচবছর পর সেই মামলার রায়দান করল আদালত৷ ফাঁসির সাজা হল গোপালের ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details