কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে জটিলতা ৷ ক্ষোভপ্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি লিখলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস ৷
আগামী 24 ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে । অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে মাসতিনেক আগে থেকেই । কিন্তু, অনুষ্ঠানের সমস্ত প্রস্তুতি হয়ে যাওয়ার পর রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানো হল ? এগজিকিউটিভ কমিটির (ইসি) বৈঠক কেন দেরিতে করে হয়েছে ? সেই প্রশ্ন তুলে রাজভবনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাজভবনে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত । সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে আচার্যের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি ৷
উপাচার্যকে চিঠি রাজ্যপালের (ইটিভি ভারত)
এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস বলেন, "সমাবর্তন অনুষ্ঠান করতে গেলে নির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হয় । নিয়ম না-মেনে সমাবর্তন করা ঠিক নয় । আগামী 24 তারিখ সমাবর্তন ৷ সমাবর্তনের আগে এক সপ্তাহেরও কম সময় রয়েছে । এত শংসাপত্রে সই করা কীভাবে সম্ভব ? ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে আমি দেখছি কী করা যায় ৷"
এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী কোনও উপাচার্য নেই ৷ স্থায়ী ফিনান্সিয়াল অফিসারও নেই ৷ অভাব রয়েছে স্থায়ী রেজিস্টারেরও । একাধিক শূন্য পদ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে । এই আবহে, গত 17 ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইসি-র বৈঠক হয় । বৈঠকে এই বছর কতজন ডিগ্রি পাবেন ? কি হবে সমাবর্তন অনুষ্ঠান ? সব বিষয়ে আলোচনা করা হয় । সমস্ত দিক বিবেচনা করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই বছর বিশেষ সাম্মানিক অনুষ্ঠান হবে না বলে সূত্রের খবর । এর ফলে ডিলিট বা ডিএসসিতে ডিগ্রি দেওয়ার বিষয়টি এই বছর বন্ধ রাখা হয়েছে । রাজভবনের তরফে চিঠিতে বৈঠকে গৃহীত এই সমস্ত সিদ্ধান্তের কথাই তুলে ধরা হয়েছে । রাজভবনের দাবি, এতগুলি সিদ্ধান্তর কোনও কিছুর অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি 'জুটা'র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "সমাবর্তনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে । আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে । ডিগ্রি দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও জটিলতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকেই নজর আমাদের ।" বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এই বছর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে খড়গপুর আইআইটি-র প্রাক্তন অধিকর্তা অমিতাভ ঘোষকে ।
প্রসঙ্গত, গত বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ঘিরে একাধিক জটিলতার সৃষ্টি হয় । অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে রাজভবন দায়িত্ব দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব সাউকে । কিন্তু, রাজভবনের তরফে সমাবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি । অবশেষে উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন অস্থায়ী উপাচার্য । পরে বুদ্ধদেব সাউকে উপাচার্যের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়াও নির্দেশ আসে রাতভবনের তরফে । যদিও সবকিছু উপেক্ষা করে সমাবর্তন অনুষ্ঠান করেছিলেন বুদ্ধদেব সাউ ৷