ব্যারাকপুর, 24 নভেম্বর: গিয়েছিলেন বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ৷ ফিরে এলেন লাশ হয়ে ৷ ইছাপুরের আনন্দমঠ সি-ব্লকের বাসিন্দা এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম কৃশানু চট্টোপাধ্যায় ৷ পরিবারের সদস্যরা রাইফেল ফ্যাক্টরি নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর 32-এর কৃশানু শনিবার রাতে তাঁর এক বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠান গিয়েছিলেন ৷ রাইফেল ফ্যাক্টরি ভিতরের পার্কে ওই অনুষ্ঠান ছিল ৷ কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কৃশানু সেখানে গিয়েছিলেন ৷ অনুষ্ঠান শেষে পার্কের পাশে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন ৷ অভিযোগ, রাইফেল ফ্যাক্টরি নিরাপত্তারক্ষীরা হঠাৎ সেখানে হাজির হন ৷ কৃশানু এবং তাঁর দুই বন্ধুকে তাঁরা বেধড়ক মারধর করেন ৷ যার জেরে ঘটনাস্থলেই কৃশানুর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ৷ গুরুতর জখম অন্য দুই যুবক ব্যারাকপুর বিএন বোস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷
ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ৷ (ইটিভি ভারত) প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই রাইফেল ফ্যাক্টরির ভিতরেই জন্মদিনের অনুষ্ঠান হচ্ছিল ৷ সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরাই দেখভালের দায়িত্বে থাকেন ৷ পরিবারের অভিযোগ ,রাইফেল ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও কারণ ছাড়াই কৃশানুকে পিটিয়ে মেরেছেন ৷ মারধরের ঘটনায় কৃশানুর অন্য দুই বন্ধু আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৷
মৃত যুবকের ভাই কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দাদা ওই রাইফেল ফ্যাক্টরি ভিতরে বন্ধুর মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ৷ রাতে আমরা খবর পাই, রাইফেল ফ্যাক্টরি নিরাপত্তারক্ষীরা দাদাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন ৷ দাদার দুই বন্ধু গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷ নোয়াপাড়া থানায় আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ রাইফেল ফ্যাক্টরির নিরাপত্তারক্ষীরা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করেন ৷ তাই, বিচার হবে কি না জানি না ! দাদাকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি চাই ৷"
একই অভিযোগ করলেন নিহত যুবকের দিদি শিল্পী চট্টোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, "আমার ভাই তো কোনও অপরাধ করেনি, যে তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে ! ও'র ছোট একটি সন্তান রয়েছে ৷ স্ত্রী ওই ঘটনা শোনার পর থেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ওই নিরাপত্তারক্ষীদের শাস্তির দাবি করছি আমরা ৷ তা না-হলে, ওঁদের সাহস আরও বেড়ে যাবে ৷ ফের এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে !"
এদিকে, ঘটনার পর থেকে ক্ষোভে ফুঁসছে মৃতের পরিবার ও পাড়া প্রতিবেশীরা ৷ সকলেই চাইছেন, অভিযুক্তদের শাস্তি হোক ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ তবে,রবিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ ৷ তবে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি নর্থ গণেশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
(গণপিটুনি একটি সামাজিক ব্যাধি। আমরা জানি হিংসা কোনও সমস্যার সমাধান নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কোনও গুজবে প্রভাবিত হবেন না। কোথাও কোনও সমস্যা হলে সরাসরি পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সুরক্ষিত থাকুন। সমাজকে সুরক্ষিত রাখার ভার আপনারও ৷)