আসানসোল ও হাওড়া, 11 জুলাই: ডোমজুড়ে ডাকাতি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল আশা মাহাতো ওরফে চাচীকে । বিহার থেকে এই মহিলাকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছেন হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা । আর পুলিশ তদন্তে নেমে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে আসানসোলে বসেই ডোমজুড়ে ডাকাতির ব্লু প্রিন্ট করেছিলেন এই আশা দেবী ওরফে চাচী । আসানসোলের মহিশীলা কলোনিতে জনৈক ঋষিকেশ সাহার বাড়ি ভাড়া নিয়ে চাচি ও তাঁর দুই সাগরেদ ছিলেন । তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি বাচ্চাও ।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকেই আসানসোলে ঋষিকেশ সাহার বাড়িতে এসে ভাড়ায় ওঠেন আশা দেবী । যদিও আসানসোলে তার আগে থেকেই থাকছিলেন তিনি । অন্য একটি বাড়িতে ভাড়ায় ছিলেন মহিশীলা এলাকাতেই । কিন্তু সেই বাড়ির মালকিনের সঙ্গে খিটিমিটি হওয়ায় তিনি মহিশিলায় ঋষিকেশ সাহার বাড়িতে ভাড়ায় ওঠেন ।
ঋষিকেশ সাহা জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে আরও দুই পুরুষ থাকতেন এবং সঙ্গে এক সঙ্গে একটি বাচ্চাও ছিল । মে মাসের শেষের দিকেই তাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে যায় । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসের শেষেই হাওড়ায় চলে যায় চাচী এবং তারপর ডোমজুড় এলাকায় রেইকি করে গত 11 জুন ডোমজুড়ে সোনার দোকানে ডাকাতি করে চাচী ও তাঁর দলবল ।
পুলিশ চাচীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে আসানসোলে বসেই ডোমজুড়ের ডাকাতির ব্লু প্রিন্ট করা হয়েছিল । সোনার দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তদন্ত চালিয়ে পুলিশ এই চাচীকে পাকড়াও করতে সক্ষম হয়েছে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চাচী বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা । আগে গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের গ্যাংয়ে ছিলেন চাচী । বর্তমানে সুবোধ সিং রাজ্য পুলিশের সিআইডির হেফাজতে রয়েছে । সাদামাটা এই চাচীকে দেখলে বোঝার উপায় থাকে না তিনি ‘ডাকাত-রানি’ ।
বাড়িতে ডাকাতকে রেখেছিলেন, এমন কথা শুনে আটকে উঠেছেন মহিশীলার সেই বাড়ি মালিক ঋষিকেশ সাহা । তিনি বলেন, "ওরা আমার বাড়ি বাড়িতে ভাড়া এসেছিল । আমি বলেছিলাম কোনও ব্যাচেলারকে ভাড়া দেব না । পরিবার আছে জেনেই আমি ভাড়া দিয়েছিলাম । একটি আধার কার্ডও আমাকে দিয়েছিল । কিন্তু সেই আধার কার্ড আবছা ছিল । আধার কার্ডের ভালো কপি আমাকে দেওয়ার জন্য আমি বলেছিলাম ওদের । কিন্তু তারপরে আমি অসুস্থ হয়ে চেন্নাই চলে যাই । আমি জানতাম ওরা পাথর লোডিং-আনলোডিং এর কাজ করে । এখানে ট্রাক্টর কিনে চাষবাস করার কথাও বলেছিল ওরা ৷ কোনোভাবেই সন্দেহ আসেনি মনে । এখন শুনে আতঙ্কিত লাগছে ।"