দুর্গাপুর, 18 জুন:সত্যিকারেরঅপহরণ নয় ৷ তবে অপহরণের কায়দায় রাস্তা থেকে দুর্গাপুরের যুবককে গাড়িতে তুলল যোগী রাজ্যের পুলিশ ৷ রাজস্থানের বাসিন্দা পোস্ট অফিস কর্মী মাখনলাল মিনাকে ভুল পদ্ধতিতে বলপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ৷ উত্তরপ্রদেশের পুলিশের পরনে ছিল 'হাফপ্যান্ট ও চটি' ৷ দুর্গাপুরের এসিপি সুবীর রায় বলেন, "এরা প্রত্যেকেই উত্তরপ্রদেশের সাহারান থানার পুলিশ কর্মী । আমরা আগ্রা পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্ত তথ্য নিয়েছি । তবে গ্রেফতারির পদ্ধতিতে ভুল ছিল বলেই এত কাণ্ড ঘটল । এখন আইন মেনে যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে ।"
দুর্গাপুরকাণ্ডে নয়া মোড় (ইটিভি ভারত) জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের নবওয়ারিয়াতে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকেন মাখনলাল মিনা নামের রাজস্থানের এক যুবক । মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ 19 নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে নববারিয়া গ্রামে ঢোকার মুখে সিটি সেন্টার পোস্ট অফিসের এই কর্মী অন্যান্য দিনের মত বাইক নিয়ে কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ৷ সেই সময় একটি ইনোভা গাড়ি তাঁর বাইকে এসে ধাক্কা মারলে মাখনলাল রাস্তার পাশে পড়ে যান । এরপরেই গাড়ি থেকে তিনজন নেমে মাখলনালকে বলপূর্বক ইনোভা গাড়িতে তুলে নিয়ে 19 নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসানসোলের দিকে রওনা দেয় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সিটি সেন্টার ডিএমসি মোড়ে ট্রাফিক গার্ড অফিসে খবর দেওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ । এরপরেই দুর্গাপুর থানার পুলিশ আসানসোলের বিভিন্ন থানার পুলিশকে জানালে কন্যাপুরে নাকা চেকিং ধরা পড়ে এই ইনোভা গাড়িটি । ততক্ষণে দুর্গাপুর থেকে এসিপি সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বড় টিম রওনা দেয় কন্যাপুরের উদ্দেশ্যে । সেখান থেকে ইনোভা গাড়ি-সহ মাখনলাল মিনাকে উদ্ধার করা হয় ৷ সঙ্গে নিজেদেরকে উত্তরপ্রদেশের আগ্রার সাহারান থানার পুলিশ পরিচয় দেওয়া 'হাফ প্যান্ট' পরা কনস্টেবল-সহ দুজন এবং একজন এএসআইকেও নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুর থানায় ।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কর্মী পরিচয় দেওয়া তিনজনের দাবি, মাখনলাল মিনা সোনা নিয়ে একটি জালিয়াতি মামলার সঙ্গে জড়িত । তাঁর খোঁজ চালাচ্ছিলেন তাঁরা অনেকদিন ধরে । আজ থেকে তিনদিন আগে তাঁরা একটি প্রাইভেট গাড়িতে দুর্গাপুরে আসেন । আজ তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল উত্তরপ্রদেশের সাহারান থানায় । কিন্তু এইভাবে স্থানীয় পুলিশকে অবগত না করে ভিন রাজ্যের পুলিশ কীভাবে একজন ব্যক্তির বাইকে ইনোভা গাড়ি দিয়ে আঘাত করে এবং তাঁকে বলপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে পারে? আদালতের নির্দেশ মতো ট্রানজিট রিমাণ্ড ছাড়া কীভাবে ভিন রাজ্যে অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া যায়? এই ঘটনার পর থেকে সেই প্রশ্নই উঠছে ৷
ইনোভা গাড়ির চালক বিজয় কুমার অবশ্য জানান, "আমি কিছুই জানি না । আমরা তিনদিন দুর্গাপুরে ছিলাম । এই তিনজনের মধ্যে একজন সাব ইন্সপেক্টর এবং দুজন কনস্টেবল বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছিল । আসানসোলে আমাদের গাড়িটি পুলিশ ধরে ফেলে । তারপরে আমাদেরকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুরে ।"