পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ক্ষতিপূরণের অর্থ সন্তানের বিকল্প হতে পারে না, করোনা রোগীর মৃত্য়ুতে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির - Calcutta High Court

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 7, 2024, 8:24 PM IST

Death Of A Covid Patient: সরকারি হাসপাতাল কি করে একজন রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠায় ? করোনায় আক্রান্তের মৃত্যুতে প্রশ্ন হাইকোর্টের ৷ বেসরকারি হাসপাতালকে 4 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ কলকাতা হাইঈকোর্টের প্রধান বিচারপতির ৷

Covid Patient Refer
কলকাতা হাইকোর্ট (ইটিভি ভারত)

কলকাতা, 7 অগস্ট:সরকারি হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য কী করে একজন রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে ? তাদের উচিত ছিল সরকারি কোনও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোগীকে পাঠানো। এই ঘটনায় স্তম্ভিত কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম। চিকিৎসার অবহেলায় 18 বছরের ছাত্রের মৃত্যুর জন্য দায়ী বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালও, মন্তব্য প্রধান বিচারপতির ।

চিকিৎসার অবহেলায় 18 বছরের ছাত্রের মৃত্যু (ইটিভি ভারত)

মৃত ছাত্রের মাকে ডেকে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, আপনার সন্তানের বিকল্প হতে পারে না ক্ষতিপূরণের সামান্য অর্থ ৷ আদালত তা সত্ত্বেও বেসরকারি হাসপাতালকে নির্দেশ দিতে পারে আপনাকে 4 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। প্রধান বিচারপতিকে মৃত ছাত্রের মা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায়ের আবেদন, "ক্ষতিপূরণের অর্থ বড় কথা নয়। যাদের গাফিলতির জন্য আমার সন্তানকে হারালাম তাদের শাস্তির কী হবে ?" উল্লেখ্য মেডিক্যাল কমিশন হাসপাতালকে 5 লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

ঠিক কি ঘটেছিল ?
উত্তর 24 পরগনার ইছাপুরের বাসিন্দা ছাত্র শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায় (18) ৷ 2020 সালের 10 জুলাই শ্বাসকষ্ট জনিত অসুস্থতা নিয়ে ইএসআই হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় মিডল্যাণ্ড বেসরকারি হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসা ও কোনও পরীক্ষা না করে রোগীর করোনো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল ৷ একটি 'কাঁচা রিপোর্ট' বানিয়ে ভর্তি না নিয়ে ফের সরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়।

মৃত ছাত্রের পরিবারের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "অসুস্থ ছাত্রকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় আধ ঘন্টা বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর বেলঘড়িয়া থানায় 101 ডায়াল করে ফোন করায় হাসপাতাল তড়িঘড়ি জানায় শুভ্রজিৎ করোনায় আক্রান্ত।" হাসপাতালের আইনজীবী জিষ্ণু বসুর দাবি, "সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বেসরকারি নার্সিং হোমটি করোনা রোগীদের জন্য চিহ্নিত নয়। তাই তাঁকে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি।"

মৃত ওই যুবকের মায়ের অভিযোগ, দিনভর ঘুরে ঘুরে কোনও রকমে ওই ছাত্রকে প্রথমে সাগরদত্ত ও পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছিল । সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মেডিক্যাল কলেজের রিপোর্টে জানানো হয় শুভ্রজিৎ করোনায় আক্রান্ত নয়। তার শ্বাসকষ্টের সময়ে অক্সিজেন না মেলায় মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে সমস্ত হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পাশাপাশি রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের কাছেও আবেদন জানানো হয় দোষীদের শাস্তির দাবিতে।

মেডিক্যাল কমিশন তাদের নির্দেশে জানায় যেহেতু সরকারি হাসপাতালগুলি তাদের এক্তিয়ার ভুক্ত নয়, তাই শুধুমাত্র বেসরকারি মিডল্যাণ্ড হাসপাতালকে 5 লক্ষ টাকা জরিমানা করে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একক বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায় ওই বেসরকারি হাসপাতালটি। হাসপাতাল কতৃপক্ষের আইনজীবীর দাবি, "তারা ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে ইচ্ছুক। কিন্তু পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।" মৃতের পরিবারের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, "ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের বিষয় চিন্তাভাবনা করতে হবে ৷ কারণ, মৃতের পরিবার চায় ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।"

প্রধান বিচারপতির নির্দেশ এই বিষয়ে প্রস্তাব আদালত চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরনের নির্দেশ দিতে পারে বেসরকারি হাসপাতালকে। তবে আদালতের এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মৃতের পরিবার ও বেসরকারি হাসপাতালকে তাদের অবস্থান জানাতে হবে পরবর্তী শুনানিতে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বুধবার ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details