জলপাইগুড়ি, 18 জুন: আগরতলা থেকে শিয়ালদা যাওয়ার পথে সোমবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডাউন-13174 কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ৷ যা এখনও পর্যন্ত প্রাণ কেড়েছে 10 জনের ৷ গতকালের ট্রেন দুর্ঘটনার পিছনে কারণ কী ! সিগনালিংয়ের ত্রুটি নাকি অন্যকিছু, উত্তর খুঁজছে রেল । খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসছেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনক কুমার গর্গ। ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও পর্যন্ত যদিও মুখে কুলুপ এঁটেছে রেল দফতর ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পার করতেই রাঙাপানি স্টেশন। সোমবার সেখানেই ঘটে যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ৷ আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছনে এসে ধাক্কা মারে দ্রুত গতির মালগাড়ি ৷ কিন্তু কীভাবে একই লাইনে দু'টো ট্রেন চলে এল, দুর্ঘটনার পরই সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন । উত্তর খুঁজতে মঙ্গলবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করবেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনক কুমার গর্গ । এরপর 19 তারিখ তিনি নিউ জলপাইগুড়ি এডিআরএম চেম্বারে রেলকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন । সাধারণ মানুষও ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কোন তথ্য দিতে চাইলে দিতে পারবেন এবং লিখিতভাবে কেউ জানাতে চাইলে তার ব্যবস্থাও রয়েছে ।
সাধারণত ট্রেন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এর আগেও একই লাইনে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনাই বেশি সামনে এসেছে । কিন্তু এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনে ধাক্কা মারার ঘটনা সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি । ফলে সিগন্যালিংয়ের বড় খামতির কথা বলছেন রেলের আধিকারিকদের একাংশ। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে আগরতলা-শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ছাড়ার সিগন্য়াল দেওয়ার পর কীভাবে একই লাইনে মালগাড়িকে ছাড়া হল, সেটাই রেলের আধিকারিকরা খতিয়ে দেখছেন ।
রেলের সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তে এসে চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি জনক কুমার গর্গ কাটিহার ডিভিশনের নিউ জলপাইগুড়ির এডিআরএম অফিসে বসেই তদন্ত প্রক্রিয়া চালাবেন। মালগাড়িটি কীভাবে একই লাইনে এল? কে মালগাড়িটিকে ওই লাইনে ছাড়ার অনুমতি দিল? এই সকল প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি ও রাঙাপানি স্টেশনের রেলকর্মীদের।
একইসঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ক'টায় স্টেশন থেকে ছেড়েছিল, মালগাড়িটি-ই বা ক'টায় ছেড়েছিল, দু'টো ট্রেনের গতিবেগ কত ছিল, এই সব প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজবেন তদন্তকারী অফিসার । পয়েন্ট ম্যান, স্টেশন মাস্টার, গেটম্যানদের পর্যবেক্ষণ কী ছিল, সেটাও জানার চেষ্টা করা হবে । পাশাপাশি জলপাইগুড়ি ও রাঙাপানি স্টেশন মাস্টারের ভূমিকা কী ছিল, এই সবকিছু খতিয়ে দেখার পরই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়বে বলে জানা গিয়েছে ।