কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: থ্রেট কালচারের অভিযোগে সাতজন জুনিয়র ডাক্তারকে সাসপেন্ড করেছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিল ৷ সেই সিদ্ধান্তে আজ স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সঙ্গে মামলাকারী ওই সাত পড়ুয়াকে ক্লাস করার ও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ ৷ তবে, এর বাইরে মেডিক্যাল কলেজের অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবেন না ওই সাতজন পড়ুয়া ৷
মামলাকারীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতে জানান, সাতজন জুনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব়্যাগিং ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে ৷ কিন্তু, তাঁদের বক্তব্য কলেজ কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে শোনেনি ৷ এমনকি আলোচনার সময় তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়নি বলে আদালতে অভিযোগ করেন কল্যাণ ৷
7 মেডিক্যাল পড়ুয়ার সাসপেনশনে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের (নিজস্ব ভিডিয়ো) এ নিয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দেন, মামলাকারী সাতজন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে হলফনামা পেশ করতে হবে তাঁদের বক্তব্য জানিয়ে ৷ পাঁচ সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে ৷ তবে, ততদিন ওই সাতজন জুনিয়র ডাক্তারের কোনও সাসপেনশন থাকবে না ৷ তাঁরা নিয়ম মেনে ক্লাস করবেন ও পরীক্ষায় বসতে পারবেন ৷ তবে, এর বাইরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের কোনও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তাঁরা ৷
উল্লেখ্য, গত 3 সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কলেজের স্টুডেন্ট গর্ভনিং বডি নির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাতজন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করে ৷ সেই সুপারিশ মেনে কলেজ কাউন্সিল 10 সেপ্টেম্বর ওই পড়ুয়াদের 6 মাসের জন্য সাসপেন্ড করে ৷ এর ফলে একটি সেমেস্টার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় ৷ তারই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেন সাত পড়ুয়া ৷
মামলাকারীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, "থ্রেট কালচার ব়্যাগিংয়ের সমান বা একই অভিযোগের মধ্যে পড়ে ৷ যে কোনও মেডিক্যাল কলেজে ব়্যাগিং বন্ধ করার জন্য অ্যান্টি-ব়্যাগিং কমিটি থাকার কথা ৷ কিন্তু, এই মেডিক্যাল কলেজে এ-ধরনের কোনও কমিটি নেই ৷ ফলে থ্রেট কালচারের মতো অপরাধ বন্ধে, যথাযথ কোনও পদক্ষেপ করা যায় না ৷"
এ প্রসঙ্গে কল্যাণ অভিযোগ করেছেন, "দিনের পর দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম ভেঙে চলেছে ৷ দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ পেলেও, কোনও অ্যান্টি-ব়্যাগিং কমিটি তৈরি না-করে বা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা না-বলে, নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কাউন্সিল ৷ এটা একেবারেই বৈধ নয় ৷ এদিকে এই থ্রেট কালচারের ফলে মামলাকারীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ৷ কলেজ কাউন্সিল একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷"
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত বলেন, "থ্রেট কালচারের অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ৷ অভিযোগ যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ কোনওরকম চাপ তৈরি করে সিদ্ধান্ত হয়নি ৷"