কলকাতা, 13 অগস্ট:স্বাধীনতা দিবসের আগে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৷ প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নজরদারি বাড়ানো হয়েছে ৷ অনুপ্রবেশ আটকাতে গঠন করা হয়েছে বিশেষ কমিটি ৷
গত 10 অগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে প্রতিপক্ষ বিজিবি-র সঙ্গে বৈঠক করে বিএসএফ ৷ বিএসএফ সূত্রের খবর, গত তিন দিনে বিজিবি-র সঙ্গে 83টি বৈঠক করা হয়েছে ৷ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফ এখনও পর্যন্ত 241টি টহলদারি অভিযান চালিয়েছে ৷
চ্যানেল অফ কমিউনিকেশন কী ?
সূত্রের খবর, বিএসএফের ইস্টার্ন কম্যান্ডের দু'জন আইজি, দু'জন এডিজি ও দু'জন এলপিআই পদমর্যাদার আধিকারিকদের নিয়ে 'চ্যানেল অফ কমিউনিকেশন' কমিটি গঠন করা হয়েছে । সেই কমিটির সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ত্রিপুরার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছেন ৷ নিজেদের মধ্যে নিয়মিত খবরাখবর আদানপ্রদান করছেন ৷
একই সঙ্গে বিএসএফের ডিআইজি ও আইজি পদমর্যাদার আধিকারিকরা সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালাচ্ছেন ৷ এলাকা ভিত্তিক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করছেন ৷ সীমান্তে গ্রামভিত্তিক কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে ৷ কোনওরকম অনুপ্রবেশের খবর পেলেই বিএসএফকে সেই তথ্য জানানোর কথা বলা হয়েছে ৷ নিরাপত্তা সম্পর্কিত 232টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷
বিএসএফের এক পদাধিকারীর দাবি, "কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নজরদারি অনেকটাই বাড়িয়েছে ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর সঙ্গেও বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে রাখা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব থাকা সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কোর-এর সুকনা সদর দফতরেও যোগাযোগ রাখছে বিএসএফের দুই ফ্রন্টিয়ার।"
বিএসএফ ইস্টার্ন কম্যান্ডের এক পদাধিকারী ইটিভি ভারতকে বলেন, "বাংলাদেশিদের অনেকেই ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন ৷ কিন্তু, সীমান্তে কড়া নজরদারি চলছে ৷ ভারতের মাটিতে পা রাখার আগেই বিএসএফ কর্মীরা তাঁদের শান্তিপূর্ণ ভাবে মাইকিং করে বুঝিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছেন বাংলাদেশে ৷ প্রতিবেশী দেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) যথেষ্ট সহযোগিতা করছে ৷ আমরাও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞবদ্ধ ৷ একারণেই 'চ্যানেল অফ কমিউনিকেশন' কমিটি নিজেদের মধ্যে নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করছে ৷"
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের ছ'জেলার বেশ কিছু অংশে জমি সমস্যার কারণে কাঁটাতারের বেড়া নেই ৷ ঠিক তেমনই দক্ষিণবঙ্গের নদিয়া, উত্তর 24 পরগনারও কিছুটা অংশ কাঁটাতারহীন রয়েছে ৷ এই সমস্ত এলাকায় এখন বিএসএফ নজর রাখছে ৷ বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠিত হলেও সেখানকার সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে নাগরিকরা এদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছেন ৷ যদিও নিরাপত্তার স্বার্থে বিএসএফ শান্তিপূর্ণ ভাবে তাঁদের বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে । গঙ্গা, মহানন্দা, ধরলা, পুনর্ভবার মতো নদী-ঘেরা সীমান্তে বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে ৷ কয়েকদিন আগে কোচবিহারের শীতলকুচি, জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি এলাকায় একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে প্রবেশের সময়ে ধরা পড়েছে ৷ গত 9 অগস্ট 1 হাজার 500 জন বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৷