কলকাতা ও কৃষ্ণনগর, 28 জুলাই: কৃষ্ণনগরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের উপর আক্রমণ ৷ অনুপ্রবেশে বাধা পেয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে বাহিনীর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷ যদিও, আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি চালায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ৷ বিএসএফ গুলি চালাতেই হামলাকারী বাংলাদেশিরা ওপারে ফিরে যায় ৷
নদিয়া জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্ত ফাঁড়ি রাংঘাটের ঘটনা ৷ জানা গিয়েছে, 8-10 জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় বিএসএফ জওয়ানকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে ৷ আত্মরক্ষার্থে বিএসএফ পালটা গুলি চালায় ৷ ঘটনাস্থল থেকে হামলায় ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে ৷
বিএসএফের তথ্য অনুযায়ী, কৃষ্ণনগরের অধীন আঞ্চলিক কার্যালয়ের বর্ডার ফাঁড়ি রাংঘাটের 68 নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা শনিবার রাতে পাহাড়া দিচ্ছিল সীমান্তে ৷ সেই সময় কাঁটাতারের ওপারে সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে আসে বাহিনীর ৷ তাঁরা দেখেন 8-10 জন বাংলাদেশি কোদালিয়া নদীর তীরে কলা বাগানের ভিতর দিয়ে নদী পার হয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে ৷ কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানরা তাদের থামতে বলে ৷ কিন্তু, দুর্বৃত্তরা বাহিনীর চোখে উজ্জ্বল আলো ফেলে ও হামলা চালায় ৷
তবে, পরিস্থিতি সামাল দিতে অনুপ্রবেশকারীদের দিকে স্টান গ্রেনেড ছোড়ে বাহিনী ৷ তবে, তারপরেও পিছিয়ে না গিয়ে, জওয়ানদের উপর আক্রমণ চালায় অনুপ্রবেশকারীরা ৷ সেই সময় জওয়ানরাও দু’রাউন্ড গুলি চালায় ৷ গুলির শব্দ শুনে অনুপ্রেশকারীরা বাঁশবাগানে লুকিয়ে পড়ে ৷ পরে সেখান থেকে ফের নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যায় ৷
এদিকে, কৃষ্ণনগরের 68 নম্বর ব্যাটালিয়নের বর্ডার ফাঁড়ি রানাঘাট ও মামাভাগিনাতেও জওয়ানদের উপর আক্রমণ চালানো হয় ৷ সেখানে মাদক পাচারের চেষ্টা হয়েছিল ৷ একইভাবে, মুর্শিদাবাদ জেলার আঞ্চলিক কার্যালয় বহরমপুরের 73 নম্বর ব্যাটালিয়নের বর্ডার ফাঁড়ি বামনাবাদ এবং মালদা জেলার সীমান্তে গরু পাচারকারী ও অনুপ্রবেশকারীরা বিএসএফের উপর একইরকমভাবে প্রাণঘাতি হামলার চেষ্টা করে ৷
উত্তর 24 পরগনার 5 নম্বর ব্যাটালিয়ন আউট পোস্ট ডোবারডায় গুলি চালিয়ে চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়েছে বিএসএফ ৷ সেখান থেকে একটি গবাদি পশু, 325 বোতল ফেনসিডিল, 2 কেজি গাঁজা ও অন্যান্য অবৈধ সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে ৷
পরপর এইসব ঘটনায় বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএসএফ ৷ বাংলাদেশি চোরাকারবারীরা যেভাবে বিনা প্ররোচনায় বিএসএফের উপর হামলা চালাচ্ছে, তা নিয়ে প্রতিবাদ জানান হয় ৷ হামলা ও আত্মরক্ষায় গুলি চালানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি প্রাথমিক রিপোর্টও করা হয়েছে বিএসএফের তরফে ৷
দক্ষিণবঙ্গ বিএসএফ জনসংযোগ আধিকারিক ডিআইজি এ কে আর্য বলেন, "আমাদের ডিউটি লাইনে এই ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক নয় ৷ বিএসএফ জওয়ানরা সাহস ও সতর্কতার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করছেন ৷ বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের ঘনঘন হামলা ও অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়ে বিজিবির সঙ্গে বারবার ফ্ল্যাগ মিটিং করা হয়েছে ৷ তার পরেও তাদের পক্ষ থেকে কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ এই নিষ্ক্রিয়তা চোরাকারবারি ও অপরাধীদের উৎসাহিত করেছ ৷ তবুও, আমাদের জওয়ানরা সীমান্ত রক্ষা করতে এবং যে কোনও পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ৷"