দুর্গাপুর, 26 ফেব্রুয়ারি: পানাগড় দুর্ঘটনায় একজন যুবককে আটক করল কাঁকসা থানার পুলিশ । ওই যুবক দুর্ঘটনার রাতে বাবলু যাদবের সঙ্গেই গাড়িতে ছিল কি না এ বিষয়ে কিছু বলতে চায়নি পুলিশ । তবে ওই যুবককে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার অভিষেক গুপ্তা ৷ এমনটাই জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে ।
ওদিকে সাদা গাড়ির মালিক ব্যবসায়ী বাবলু যাদব কোথায় ? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যজুড়ে । তারই মধ্যে কাঁকসা থানায় এলেন পানাগড়ে দুর্ঘটনার দিন সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে গাড়িতে থাকা তিন সহযোগী ।
পুলিশ দাবি করছে, রবিবার গভীর রাতে পানাগড়ের রাস্তায় সুতন্দ্রার সঙ্গে কোনও ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেনি ৷ তবে পুলিশের দেওয়া একটি সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে, বাবলু যাদবের সাদা গাড়িটি আগে যাচ্ছে, আর প্রচণ্ড গতিতে তার পিছনে যাচ্ছে সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি । পানাগড়ের পুরনো জাতীয় সড়ক থেকে রাইস মিল রোডে ঢোকার সময় উলটে যায় সুতন্দ্রার গাড়ি । সেই ঘটনায় মৃত্যু হয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার ম্যানেজার তথা চন্দননগরের বাসিন্দা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের ৷
পানাগড় দুর্ঘটনায় যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ (নিজস্ব ছবি) মঙ্গলবার তদন্তে কাঁকসা থানায় দেখা যায় সিআইডিকে । বাবলু যাদবের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত চালান এসিপি । তবে, মৃত নৃত্যশিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মা ইভটিজিংয়ের বক্তব্যেই অনড় রয়েছেন । এরপর বুধবার সকালে কাঁকসা থানায় পৌঁছন সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের তিনজন সহকর্মী। বেলা 11টা 20 মিনিট নাগাদ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা কাঁকসা থানায় আসেন । পৌঁছন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি কাঁকসা সুমন কুমার জয়সওয়ালও ।
এখন বাবলু যাদব কতক্ষণে গ্রেফতার হয় সেই দিকেই তাকিয়ে সারা রাজ্যের মানুষ । দুর্ঘটনার রাতে বাবলুর গাড়িতে কারা ছিলেন সেই নামগুলি প্রকাশ্যে এনেছেন ব্যবসায়ীর লোহার স্ক্র্যাপ কারবারের গুদামের কর্মী জিয়া লাল । তিনি জানিয়েছেন, বাবলুর গাড়িতে ওই সন্ধ্যায় ছিলেন তাঁরই কর্মচারী গোপী, রাজকুমার, চন্দন ও ছোটু ।
পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর পানাগড়ের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বাবলু যাদবের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন । পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা আর অন্যতম সহযোগী মিন্টু মণ্ডল কাঁকসা থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাতে কোথাও ইভটিজিংয়ের কথার উল্লেখ নেই । তবে সেই অভিযোগপত্রে স্পষ্ট করে লেখা আছে, সাদা গাড়িটি সুতন্দ্রার গাড়িকে ধাওয়া করতে থাকে, বারবার আঘাত করে ৷ রাইস মিল মোড়ে ওই সাদা গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে সুতন্দ্রাদের গাড়ির বাম দিক দিয়ে ওভারটেক করার কারণে তাঁদের গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং সেই কারণেই মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার ।