চন্দননগর,26 ফ্রেব্রুয়ারি: সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর কয়েকদিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাঁকসা থানার পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে মাত্র । গাড়ির মালিক বাবলু যাদব বা অন্য কেউ গ্রেফতার হয়নি। আর তাই তদন্ত নিয়ে সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। পুলিশের দেখানো বিক্ষিপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে সন্তুষ্ট হচ্ছেন না তিনি । ধারণা করছেন, কিছু একটা গোপন করা হচ্ছে । সাদা গাড়ি বা নীল গাড়ি (সুতন্দ্রার গাড়ি) যেই দোষী হোক না কেন শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মা তনুশ্রী বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজে দেখছি সাদা গাড়িটা আগে যাচ্ছে ৷ পিছনে আমাদের গাড়িটা খুব জোরে যাচ্ছে । আমার প্রশ্ন, এত জোরে কেন চালাচ্ছিল ? ওরা তো দাঁড়িয়ে যেতে পারত। গাড়িতে যারা ছিল, তাঁরা কেন ড্রাইভারকে বলেনি এত জোরে না-চালাতে । আমি কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না । কে আসল দোষী সেটা পুলিশ তদন্ত করুক । মেয়ের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কাজে কোনও সমস্যা ছিল বলে শুনিনি । তবে ওদের কাজের ব্যাপারে ওরাই জানত ।’’
সুতন্দ্রার মামা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী হয়েছিল সেটা আমরা ফুটেজে দেখেছি । তাতে মনে অনেক কিছুই হচ্ছে । যে ঘটনা ঘটেছে তাতে ন’জন প্রত্যক্ষদর্শী । আমার ভাগ্নি মারা গিয়েছে । কোনওভাবে রাজনৈতিক চাপে না-পড়ে স্বচ্ছ তদন্ত হোক। ইভটিজিং হয়েছে না হয়নি সেটা ওই ন’জনই বলতে পারবে । কিন্তু হাইওয়েতে ইভটিজিং নতুন কোনও ব্যাপার নয় । আমার আত্ময়ীদের সঙ্গেও হয়েছে । তাই বলতে পারি যে এর বিরুদ্ধে লড়াই হওয়া দরকার ।"
এদিকে, বুধবার চন্দননগরে সুতন্দ্রার বাড়িতে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার । মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন । সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের উচিত সুতন্দ্রার পরিবারকে এখনই 10 লক্ষ টাকা সাহায্য করা । আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ পানাগড়ের ঘটনায় সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশ করে জানিয়ে দিয়েছিল, ইভটিজিং এর ঘটনা নয় । তদন্ত শেষ হল না ৷ তার আগেই পুলিশ বিচার করে ফেলল কি হয়েছিল ?"
তিনি আরও বলেন, " দু’টো গাড়ি ছিল ৷ যে গাড়িতে তরুণী ছিলেন তার চালক-সহ অন্যান্য যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করা হল ৷ কিন্তু যে সাদা গাড়ি আটক হয়েছে তার যাত্রীরা কোথায় ? ওই গাড়ির মালিক বাবলু যাদব নামে একজন। তিনি কি প্রভাবশালী ? তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ? জাতীয় সড়কে রাতে পুলিশ কোথায় ? মৃতার মা যে বয়ান দিচ্ছেন সেটাকে অভিযোগ আকারে কেন নেওয়া হল না ? দলমত নির্বিশেষে মনে করি সকলের এই ঘটনায় পরিবারের পাশে থাকা উচিত ।"