কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুজোয় এক ঘণ্টা আলো নিভিয়ে রাখার প্রস্তাব দিলেন শিল্পী বাদশা মৈত্র ৷ আরজি কর হাসপাতালে যে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার বিচার এবং প্রতিবাদে এই প্রস্তাব শিল্পীর ৷ শনিবার বিকেলে আরজি কর হাসপাতালে একটি কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বাদশা মৈত্র ৷ ওখানেই তিনি বলেন, "পুজোর সময় কোনও একটা দিন একটা ঘণ্টা আলো নিভিয়ে তিলোত্তমার কথা আমরা মনে করতে পারি কি না, ভেবে দেখবেন ।"
আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে ছবি আঁকছেন শিল্পীরা (ইটিভি ভারত) শুধুমাত্র এই প্রস্তাব নয়, এর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে আরও বেশ কিছু প্রস্তাব রাখেন বাদশা মৈত্র ৷ তাঁর কথায় মন্ত্রীর পরে যে পদ আছে সেখানে আমলা নয়, দায়িত্বপূর্ণ এক নির্ভীক চিকিৎসককে রাখা হোক ৷ এর সঙ্গে তিনি জেলা হাসপাতালের অবস্থা নিয়েও সরব হন ৷ তিনি বলেন, "জেলা হাসপাতালে নেতাদের সাংঘাতিক দাপট ৷ রেফার করার পরই নেতাদের ফোন আসে ৷ এমনকী যে টাকা সরকার বরাদ্দ করত তা কমে গিয়েছে ৷ ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলি থাকে না ৷ মানুষের রাগ পড়ে চিকিৎসকের উপর ৷ তাই জেলা হাসপাতালে সরকার কী দিচ্ছে, কী ওষুধ, সবটা এমারজেন্সির বাইরে লিখে রাখা হোক ।"
এর সঙ্গে বাদশা জানান, পুরো বিষয়টায় রাজনীতি শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, "এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা হবে ৷ অরাজনীতির নাম করে শাসক দলের কথা বলবে ৷ এটা সম্পর্কে দল-মত বাদ দিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে ৷ 14 তারিখের ঘটনার পর স্মৃতি যখন বলতে পারেননি এই ঘটনার দায় কার মুখ্যমন্ত্রী তখন অন্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এর দায় দিয়েছেন এবং খুব নিম্নমানের রাজনীতি করেছেন।"
আরজি করের নির্যাতিতার ছবি আঁকছেন শিল্পী (ইটিভি ভারত) আরজি করের ঘটনার জেরে দিন দুই আগে চারুকলা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেন শিল্পী সনাতন দিন্ডা ৷ শনিবার তাঁকে শ্যামবাজারে সিপিএম ছাত্র যুব ও মহিলাদের প্রতিবাদ মঞ্চে দেখা গেল ৷ আঁকলেন ছবিও ৷ চাইলেন বিচার ৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সঠিক বিচারের দাবিতে যে কোনও মঞ্চে যেতে তিনি রাজি আছেন বলে জানালেন ৷ কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন যে কোন আন্দোলন বা প্রতিবাদে নেতৃত্বর প্রয়োজন আছে। তার কথায়,"আন্দোলনে ছাতা দরকার"।
শনিবার ইটিভি ভারতের প্রশ্নই তিনি বলেন, "আমার যা কাজ আমি তাই করেছি ৷ আমার মা, ভাই, বোন, বান্ধবী, আত্মীয়, পরিজন আমার প্রেমিকারা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন ৷ আমি তো ভীতুর মতো ঘরে বসে থাকতে পারি না ৷ আর আমি কোনও দিনও গজদন্ত মিনারে বসে ছবি আঁকিনি ৷ মানুষের পাশে ছিলাম আগাগোড়া ৷ এখনও তাই আছি, তাই রাস্তায় নেমেছি। ছবি আঁকছি ৷ আমার দায় থেকেই আমি ছবি আঁকছি ৷"