কলকাতা, 10 অক্টোবর: পাচারকারীদের থেকে উদ্ধার হওয়া দক্ষিণ আমেরিকার আলপাকা এবার আলিপুর চিড়িয়াখানায় ৷ যা উৎসবের মরশুমে আলিপুর চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে ৷ তিনদিন আগেই চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়েছে সেটিকে ৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর, দর্শকদের জন্য সেটিকে এনক্লোজারে ছাড়া হয়েছে ৷
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত ইটিভি ভারতকে বলেন, "গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি নতুন জীবজন্তু চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়েছে ৷ তার মধ্যে নতুন আকর্ষণ হল দক্ষিণ আমেরিকার আলপাকা ৷ এই প্রাণীটিকে বিএসএফ উদ্ধার করেছিল ৷ পাচার হয়ে যাওয়ার আগেই প্রাণীটিকে উদ্ধার করা হয় ৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাকে সাধারণ দর্শকদের জন্য এনক্লোজারে রাখা হয়েছে ৷ এটি সাধারণত আমাদের এখানকার চিড়িয়াখানা বা কোথাও তেমন পাওয়া যায় না ৷ দেখতেও বেশ সুন্দর ৷"
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা শুভঙ্কর সেনগুপ্ত ৷ (ইটিভি ভারত) বিএসএফ সূত্রে খবর, আলপাকাটি নদিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ৷ আলপাকা হচ্ছে উট ও লামার প্রজাতির ৷ এদের দক্ষিণ আমেরিকার পাহাড়ি এলাকায় পাওয়া যায় ৷ এটিকে পাচার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়েছিল ৷ তারপর সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল ৷ কিন্তু, ভারতীয় সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর সক্রিয়তায় সেই চোরাচালান ব্যর্থ হয়ে যায় ৷ নদিয়া সীমান্তের ফাঁড়ি বনপুরের বিএসএফ বন্যপ্রাণ পাচারের চেষ্টা আটকে দেয় ৷ আলপাকাটি ভারতে পাচারের আগেই আটক করা হয় ৷
বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গের জনসংযোগ আধিকারিক ডিআইজি এনকে পান্ডে জানান, আলপাকা পেরুর আন্দিজের পাদদেশের মূল্যবান প্রাণী ৷ বিলাসবহুল উলের জন্য বিখ্যাত এটি ৷ বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করা হচ্ছিল ৷ আলপাকা হিমালয় অঞ্চলের বাইরে ভারতে খুব কমই পাওয়া যায় ৷ তিনজন বাংলাদেশি চোকাচালানকারী আলপাকাকে বাঁশের মই ব্যবহার করে কাঁটাতারের উপর দিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে পাচার করা হচ্ছিল ৷ সেই সময়ই আলপাকাটিকে উদ্ধার করা হয়েছে ৷
বিএসএফ জানিয়েছে, ভারতীয় ভূখণ্ডে চারজন পাচারকারী এই প্রাণীটিকে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল ৷ তাঁদের দিকে বিএসএফ জওয়ানরা এগিয়ে যায় ৷ আলপাকার পাচার রুখতে বিএসএফ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায় ৷ গুলির শব্দে বাংলাদেশি পাচারকারীরা আলপাকাটিকে সীমান্তের এপারে রেখে পালিয়ে যায় ৷ ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা পাচারকারীরাও অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে গা-ঢাকা দেয় ৷ পরে আলপাকাটি বন দফতরের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ ৷ এরপর আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের হাতে সেটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিড়িয়াখানার জেব্রার এনক্লোজারের পাশে রাখা হয়েছে সেটিকে ৷