পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

আদালতে ভুয়ো সাক্ষী দেখিয়ে বেকসুর খালাস অভিযুক্ত, যোগ দিলেন পুলিশে

অভিযোগকারীর দাবি, তিনি কোনওদিন আদালতে সাক্ষী দিতে আসেননি । মালদা জেলা আদালতে পুট-আপ পিটিশন দাখিল করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি ৷

malda district court
আদালতে ভুয়ো সাক্ষী দিয়ে বেকসুর খালাস অভিযুক্ত (নিজস্ব ছবি)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 31, 2024, 11:10 AM IST

মালদা, 31 অক্টোবর: পারিবারিক বিবাদের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ছিল । সেই ঘটনায় সাক্ষী গ্রহণ হয়ে রায় ঘোষণা হয়ে গিয়েছে । অভিযুক্ত ব্যক্তি বেকসুর খালাস হওয়ার দাবি করে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পর্যন্ত পেয়েছেন ।

অথচ অভিযোগকারীদের দাবি, এখনও পর্যন্ত তাঁরা আদালতে সাক্ষী দিতে যাওয়ার নোটিশ পর্যন্ত পাননি । তাঁদের নামে ভুয়ো ব্যক্তিদের নিয়ে এসে আদালতে সাক্ষী দেওয়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ । এই পরিস্থিতিতে বুধবার মালদা জেলা আদালতে পুট-আপ পিটিশন দাখিল করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন অভিযোগকারী ও তাঁর পরিবার ।

মালদা জেলা আদালতে চাঞ্চল্যকর ঘটনা (ইটিভি ভারত)

ঘটনাটি ঘটেছিল 2020 সালের 23 জানুয়ারি । মানিকচকের জালালপুরের বাসিন্দা শেখ তাহিজুদ্দিন অভিযোগ করেন, পারিবারিক বিবাদের জেরে দিলদার হোসেন-সহ আটজন পরিকল্পিতভাবে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢোকেন । তাঁকে ঘর থেকে বের করে মারধর চলতে থাকে । সেই সময় দিলদার হোসেন হাঁসুয়া দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন । পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন । সেই ঘটনায় এক মাসের মধ্যে চার্জশিট পেশ করে মানিকচক থানার পুলিশ ।

শেখ তাহিজুদ্দিন বলেন, "2020 সালে হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করে আমার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল । ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি অভিযোগ করি । অভিযুক্তের জামিন হয় । এরপরে আর কিছু জানা যায়নি । সম্প্রতি আমি জানতে পারি, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছে । সেই খবর পেয়েই আমি উকিলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করি । উকিলবাবুরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এই মামলা খালাস হয়ে গিয়েছে । আমি, আমার স্ত্রী ও ছেলে নাকি আদালতে এসে মামলার সাক্ষী দিয়েছি । অথচ আমি কোনও আদালতে সাক্ষী দিতে আসিনি । এমনকি আমার স্ত্রী, ছেলেও আসেনি । উকিলবাবুকে ধরে আজ আমি এনিয়ে আদালতে পিটিশন করেছি । আমরা উচ্চ আদালতে যাচ্ছি ।"

আইনজীবী অমলকুমার দাস ও সারিকুল আলমের কথায়, "2020 সালের জানুয়ারি মাসে শেখ তাহিজুদ্দিন, দিলদার হোসেন-সহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকচক থানায় মামলা হয় । পুলিশ এই ঘটনার চার্জশিট পেশ করে । পরবর্তীতে দেখা যায় অভিযুক্ত দিলদার হোসেন পুলিশে চাকরি পেয়েছে । এরপরেই সকলের সন্দেহ হয় । আমরা তথ্য জানার আইন প্রয়োগ করে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাই । আরটিআইয়ের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, অভিযুক্ত দিলদার হোসেন আদালত থেকে বেকসুর খালাস হয়ে গিয়েছেন ।"

তিনি আরও বলেন, "অনেক খোঁজ নিয়ে জানা গেল, 2022 সালের 13 মে শেখ তাহিজুদ্দিনের নামে একজন আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন । ওই বছরেই 5 জুলাই ওঁনার স্ত্রী বেগম বিবি ও ছেলে ওয়াসিম আক্রমের নামেও সাক্ষী দেওয়া হয়েছে । সেই সাক্ষীর ভিত্তিতে ওই বছরই 20 জুলাই আদালত রায় ঘোষণা করে । অথচ শেখ তাহিজুদ্দিন, তাঁর স্ত্রী-ছেলে কোনওদিনই সাক্ষী দেওয়ার জন্য ডাক পাননি । তাঁরা আদালতে সাক্ষী দিতেও যাননি । কীভাবে কোনওরকম পরিচয়পত্র ছাড়া শেখ তাহিজুদ্দিন ও তাঁর পরিবারের শনাক্তকরণ হল ? আমাদের ধারণা, অভিযুক্ত ও আদালতের কর্মীদের কোনও চক্রান্ত রয়েছে । এনিয়ে আমরা আজ আদালতে পুট-আপ পিটিশন দিয়েছি । বিষয়টি নিয়ে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছি ।"

ঘটনা প্রসঙ্গে দিলদার হোসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details