আলিপুরদুয়ার, 7 ফেব্রুয়ারি: মাত্র কুড়ি দিন বয়স ৷ কিছুই চেনা জানা হয়নি ৷ এই অবস্থায় দলছুট হয়ে পড়ে এক হস্তিশাবক ৷ তাকে এখন আগলে রাখা হচ্ছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং সেন্ট্রাল পিলখানায় ।
দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগ থেকে উদ্ধার হয় শাবকটি ৷ তারপর সেটিকে জলদাপাড়ায় নিয়ে আসা হয় । 2 ফেব্রুয়ারি মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শাবকটি মহানন্দা উত্তর রেঞ্জের 10 মাইল বন দফতরের অফিসের কাছে চলে আসে । বনকর্মীরা তিন দিন ধরে ওই শাবকটিকে তার মায়ের কাছে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন । এদিকে মাতৃদুগ্ধের অভাবে শাবকটি দুর্বল হয়ে পড়ায়, বন বিভাগ তার যত্নের জন্য জলদাপাড়ায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয় ।
জলদাপাড়ায় বনকর্মীদের স্নেহে পালিত হচ্ছে দলছুট হস্তিশাবক (ইটিভি ভারত) বৃহস্পতিবার রাতে হস্তি শাবকটিকে সড়কপথে জলদাপাড়ায় নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানে বিশেষজ্ঞ মাহুতদের একটি দল এবং একজন পশু চিকিৎসক শাবকটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য চিকিৎসা শুরু করেেছন । বর্তমানে পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে, শাবকটিকে ফর্মুলেট করা শিশুখাদ্য দেওয়া হচ্ছে । যেহেতু সে এখনও বোতল থেকে ঠিকমত দুধ পান করতে শেখেনি, তাই জলশূন্যতা রোধ করার জন্য গ্লুকোজ এবং ইলেক্ট্রোলাইটও খাওয়ানো হচ্ছে ।
এই বিষয়ে জলদাপাড়া বন বিভাগের ডিএফও পারভিন কাসওয়ান বলেন, "দার্জিলিং বন্যপ্রাণী বিভাগ উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য হস্তিশাবকটিকে জলদাপাড়ায় পাঠিয়েছে । আমাদের পশু চিকিৎসক দল তার স্বাস্থ্যের উপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে । যত্ন পেয়ে ভালো সাড়া দিচ্ছে সে । পশু চিকিৎসক ও সিনিয়র মাহুতদের নির্দেশ অনুসারে তাকে ল্যাকটোজেন দুধ খাওয়ানো হচ্ছে ।"
হস্তিশাবককে ল্যাকটোজেন খাওয়াচ্ছেন বনকর্মীরা (ইটিভি ভারত) প্রসঙ্গত, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের এই পিলখানায় এর আগেও বেশ কয়েকটি উদ্ধার হওয়া হস্তিশাবক যত্নে বড় হয়েছে । যার মধ্যে রয়েছে 2020 সালে কোদাল বস্তি রেঞ্জের তোর্সা নদী থেকে উদ্ধার করা পাঁচদিনের হস্তিশাবক বীর, 2023 সালে জলপাইগুড়ি বিভাগের দলমোর বিট থেকে উদ্ধার করা পাঁচমাসের হস্তিশাবক গজরাজ এবং 2024 সালে বৈকুণ্ঠপুর বিভাগের ফুলঝোরা বিট থেকে উদ্ধার করা আট মাস বয়সি হস্তিশাবক তিস্তা রানি ।উত্তরবঙ্গে হাতি সংরক্ষণ এবং পুনর্বাসনে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে ।