হাবড়া, 18 নভেম্বর: কোলে দুই শিশু। কাঁধে পুঁটলি। যাযাবরের বেশে এক দম্পতি পাড়ায় ভিক্ষা করে বেড়ায়। দেখে বোঝার উপায় নেই, ওই দম্পতিই গত কয়েকদিনে সোনাদানা, টাকা-পয়সা হাতসাফাই করে গেরস্থের ঘুম কেড়েছে। রবিবার অবশ্য সেই জারিজুরি আর কাজে লাগল না।হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল। অবশেষে গণধোলাই দিয়ে বাসিন্দারা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার হাবড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়ার বাউগাছি পারুইপাড়া এলাকার বাসিন্দারা এদিন দুপুরে দেখেন কোলে দুই শিশু ও কাঁধে পুঁটলি নিয়ে দুই যুবক-যুবতী রাস্তা দিয়ে দৌঁড়চ্ছে। তাদের পিছনে একদল মহিলা 'চোর চোর' বলে চিৎকার করতে করতে ধাওয়া করে চলেছেন। কিছুটা দূরে গিয়ে এলাকাবাসী ওই দুই যুবক-যুবতীকে ধরে ফেলে। আর যুবকের মুখ খুলতেই গালের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় দু'জোড়া সোনার দুল। তারপর তাদের কাঁধের পুঁটলি খুলে তল্লাশি শুরু হয়।
মোট তিনটি পুঁটলি ছিল। তার থেকে উদ্ধার হয়েছে 500 টাকার নোটের দু'টি বান্ডিল, দুটো হাতঘড়ি, সোনার হার ও বেশ কয়েকটির রুপোর আংটি। খবর পেয়ে হাবড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই দুই যুবক-যুবতীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিড়া রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় একদল বানজারা ঘাঁটি গেড়েছে। ধৃতরা তাদের দলেরই সদস্য বলে জানা গিয়েছে।
নাংলা পারুইপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ আশা সর্দার বলেন, "কোলে দুই শিশুকে নিয়ে বানজারা যুবক-যুবতী পাড়ায় চুরি করতে এসেছিল। সরল বিশ্বাসে আমরা অনেকে তাদের ভিক্ষাও দিয়েছি। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তির ছদ্মবেশে ওরা বাড়ি বাড়ি চুরি করছিল। আমরা আজ তাদের হাতেনাতে ধরেছি। পরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।"
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল মতিন মণ্ডল বলেন, "দুপুরবেলা খবর পাই, বানজারার ছদ্মবেশে গ্রামবাসীরা দুই যুবক-যুবতীকে ধরে রেখেছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের ব্যাগ ও পুঁটলি তল্লাশি করে সোনার অলংকার, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য জিনিসপত্র পেয়েছি। পরে তাদের আমরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।" পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নজর রাখা হচ্ছে বিড়ায় ঘাঁটি গাড়া বানজারা দলের ওপরও।