দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, 28 অগস্ট: বনধের সমর্থন এবং বনধের বিরোধিতার কারণে বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষে মাথা ফাটল এক বিজেপি কর্মীর। আহত আরও এক বিজেপি কর্মী। অন্যদিকে, বনধ ঘিরে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) এলাকাতেও ছড়াল উত্তেজনা। জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে গোটা এলাকায়।
মাথা ফাটল 2 বিজেপি কর্মীর (ইটিভি ভারত) পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক বনধ সমর্থককে আটক করা হয়। অন্যদিকে, ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এদিন বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামেন বিধায়িক শিখা চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ, এনজেপি এলাকায় তাঁকে হেনস্থা করে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। পরে স্কুটিতে করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান শিখা চট্টোপাধ্যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়। অভিযোগ, তিনি এনজেপি এলাকায় পৌঁছতেই তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্যদিকে, আহত দু'জনকে বুনিয়াদপুরের রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বিজেপির বুনিয়াদপুর টাউন সভাপতি দ্বীপেশ বসাক এর অভিযোগ, বনধের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ পিকেটিংয়ে বংশীহারী শিবপুর এলাকায় তৃণমূলের সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা আক্রমণ চালায়। বিজেপির পাঁচ কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মানিক সরকার এবং বুদ্ধেশ্বর পাল নামে দুই কর্মী গুরুতর আহত বলে দাবি।
সারা রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর পুরসভা-সহ বংশীহারী ব্লকে বিজেপির ডাকা, 12 ঘন্টা বাংলা বন্ধের সমর্থনে সকাল থেকেই ব্যাপক প্রভাব ছিল বলে দাবি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা মিছিল বের করে। বুনিয়াদপুর বাস স্ট্যান্ড-সহ পীরতলা এলাকায় বিভিন্ন দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানাই এবং সেই সঙ্গে রাস্তা অবরোধ করে। খবর পেয়ে ছুটে আসে বংশীহারী থানার পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। অপরদিকে, বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বনধের সমর্থনে বংশীহারী শিবপুর এলাকায় মিছিল বের করে।
শিবপুর এলাকায় সেই সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সে সময় ছয়জন কর্মী-সমর্থক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা সংবেদনা খাওয়ায় তাদেরকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা রশিদ প্রাথমিক হাসপাতালে নিয়ে আসে। রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তিন-চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও তিনজনকে রেফার করা হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজে। তবে এই ঘটনার কথা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয় শিবপুর এলাকায় বিজেপি সমর্থকরা রাস্তা বন্ধ করার কারণে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয় এবং আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাদের কোনও কর্মী-সমর্থকরা বিজেপি কর্মীর গায়ে হাত দেয়নি বলেও দাবি।
এই বিষয়ে বুনিয়াদপুর পুরসভার বিজেপির টাউন সভাপতি দিবস বসাক জানান, বন্ধের সমর্থনে আমরা বুনিয়াদপুর-সহ শিবপুর এলাকায় মিছিল করছিলাম। সেই সময় বুনিয়াদপুর পুরসভার চেয়ারপারসন এবং ভাইস চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে তাদের কর্মী সমর্থকরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে। তাতে আমাদের তিনজন কর্মী গুরুতর আহত হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত। অন্যদিকে, তৃণমূলের চেয়ার পারসন কমল সরকার জানান শিবপুর এলাকায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করেছিল। এই সময় সেখানকার টোটো চালক-সহ বিভিন্ন দোকানদাররা তাদের উপর চড়াও হয় এবং তারা গুরুতর আহত হয়। আমাদের কোন কর্মী তাদের গায়ে হাত দেয়নি, তারা মিথ্যা দোষারোপ করছে।