দার্জিলিং, 11 ডিসেম্বর: ঘুম ফেস্টিভ্যালে যাত্রী নিয়ে ফের লাইনে ছুটল ব্রিটিশ আমলের স্টিম টয়ট্রেন ইঞ্জিন 'বেবি সেভক' । এই 'বেবি সেভকে'র বয়স 143 বছর । এবারের ঘুম ফেস্টিভ্যালে নজর কাড়ল শতাব্দী প্রাচীন এই ইঞ্জিন ৷
শনিবার থেকে রবিবার ঘুম ফেস্টিভ্যালে রেল লাইনে ছুটল পুরনো এই টয়ট্রেন, যা দেখতে উপড়ে পড়ল পর্যটকদের ভিড় ৷ এমনকি পর্যটকদের নিয়ে এক চক্কর সফরও করে এই শতাব্দী প্রাচীন টয়ট্রেন ৷
1881 সালে 'বেবি সেভক' স্টিম ইঞ্জিনটি তৈরি হয় (নিজস্ব ছবি) 143 বছরের 'বেবি সেভক'
চলতি বছরের 30 নভেম্বর থেকে ঘুম ফেস্টিভ্যালের সূচনা হয় । সেখানে 100 বছরেরও বেশি সময় পুরনো ব্রিটিশ আমলের তিনটি স্টিম ইঞ্জিনের ইতিহাসকে তুলে ধরা হয় । তার মধ্যে একটি হল 143 বছরের 'বেবি সেভক' ৷ রবিবারই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় ঘুম ফেস্টিভ্যাল ।
এবারের দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের তরফে আয়োজিত ঘুম ফেস্টিভ্যালে পর্যটকদের সামনে পাহাড়ের ঐতিহাসিক খেলনা গাড়ি শতাব্দী প্রাচীণ টয়ট্রেনের ইতিহাসের সাক্ষীর গাঁথা তুলে ধরল 'বেবি সেভক'। শৈলরানীর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত হিমালয়ান রেলের ইতিহাসের সঙ্গী 143 বছরের 'বেবি সেভক' ৷ তার সঙ্গে ইতিহাস সফরের সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরাও ।
ঘুম ফেস্টিভ্যালে ফের লাইনে ছুটল ইঞ্জিনটি (নিজস্ব ছবি) 'বেবি সেভকে'র ইতিহাস
1881 সালে 'বেবি সেভক' স্টিম ইঞ্জিনটি তৈরি করে গিলেন্ডারস আরবাথনট অ্যান্ড কোম্পানি নামে এক সংস্থা । 1970 সাল পর্যন্ত টানা ইঞ্জিনটি পরিষেবা দেয় । সেভকের নামে ওই ইঞ্জিনের নামকরণ করা হয়েছিল 'বেবি সেভক' । 100 বছর আগে গেইলখোলা থেকে সেভক পর্যন্ত একটি টয়ট্রেনের শাখা লাইন ছিল । যা পরবর্তীতে বন্ধ হয় । তারপর ইঞ্জিনটিকে বিশ্রাম দেওয়া হয় ।
পরবর্তীতে শিলিগুড়ি জংশন রেল স্টেশনটি পুনরায় সংস্কার করা হয় 1990 সালে ৷ সেসময় 'বেবি সেভক'কে ফের পর্যটকদের দেখার জন্য শিলিগুড়ি স্টেশনের সামনে সাজিয়ে রাখা হয় । বছরখানেক সেখাবে থাকে ইঞ্জিনটি ৷ এরপর পুনরায় সেটিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 2 হাজার তিনশো ফুট উচ্চতায় দেশের সর্বোচ্চ রেল স্টেশন ঘুমে দেশ বিদেশের পর্যটকদের জন্য সাজিয়ে রাখা হয় । কিন্তু, ঘুম ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে পর্যটকদের উপহার দিতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল ও দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে ওই ইঞ্জিনটিকে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেয় ।
143 বছরের পুরনো 'বেবি সেভক' (নিজস্ব ছবি) টয়ট্রেন পরিষেবা
এ বিষয়ে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলের ডিরেক্টর প্রিয়াংশু বলেন, "আমাদের লক্ষ্য ছিল, এবারের ঘুম ফেস্টিভ্যালে পর্যটকদের জন্য একটা আলাদা কিছু উপহার দেওয়ার । সেজন্য আমরা 'বেবি সেভক'কে বেছে নিই । শনিবারই পর্যটকদের উপস্থিতিতে 'বেবি সেভকে'র তিনধারিয়ায় যাত্রার সূচনা হয় ।"
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চেতন শ্রীবাস্তব তিনধারিয়া ওয়ার্কশপে 'বেবি সেভকে'র যাত্রার সূচনা করেন । আরও জানা গিয়েছে, প্রায় টানা এক মাস তিনধারিয়া ওয়ার্কশপে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা দিনরাত এক করে 'বেবি সেভক'কে পুনরায় চলার উপযোগী করে তোলেন । কিন্তু ফেস্টিভালের পরে ইঞ্জিনটিকে ফের ঘুম স্টেশনে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে ।