কলকাতা, 29 জানুয়ারি: অঙ্কের বিচারে রঞ্জি ট্রফির নক-আউট পর্বে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে । সেই সুযোগ বাস্তবে অনেক পারমুটেশন-কম্বিনেশনে নির্ভরশীল । তাই সেদিকে না-তাকিয়ে বাংলা দল অন্তত সাফল্য দিয়ে মরশুমটা শেষ করার লক্ষ্যে মাঠে নামতে চাইছে । তবে দু’দলের ব্যাট-বলের যুদ্ধ ছাপিয়ে আগামী চারদিন ইডেন ঋদ্ধিমান সাহার বিদায় লগ্নের আবেগে প্লাবিত । কোচ বলছেন, তাঁর অধিনায়কত্বে ঋদ্ধিমানের অভিষেক হয়েছিল । সেই ম্যাচ ঋদ্ধি সাজিয়েছিলেন সেঞ্চুরিতে । আশা করছেন বিদায়ী ম্যাচও ঋদ্ধি হয়তো সেঞ্চুরিতে সাজাবেন । অধিনায়ক অনুস্টুপ মজুমদার জানালেন, অনুর্ধ্ব-19 দলে একসঙ্গে খেলা শুরু করেছিলেন । যার হাতে উইকেটরক্ষার ভার তুলে দিয়ে ঋদ্ধিমান যাচ্ছেন, সেই অভিষেক পোড়েল বলছেন প্রচুর কিছু শিখেছেন ।
যাকে নিয়ে আবেগের স্মৃতিচারণ সেই ঋদ্ধিমান অবশ্য ভাবাবেগহীন । পাপালি বললেন, “তোমরা যারা আমাকে চেনো, তাঁরা জানো আমি আবেগে ভেসে যাওয়ার মানুষ নই । 28 বছর ধরে ওয়ার্ম আপ করতে হয়েছে । তা আর করতে হবে না ভেবে আমি খুশি ৷” তাঁর কাছে ব্যক্তি নয়, দল সবার আগে গুরুত্ব পেয়ে এসেছে । বিদায়বেলাতেও একই দর্শন নিয়েই মাঠে নামবেন । জাতীয় দলে খেলা স্টাম্পার-ব্যাটার বলছেন, “দল জিতলেই আমি খুশি । আমার রান যদি দলের জয়ে কাজে লাগে, তাহলে খুশি হব । শেষবারের মতো হয়তো কিপিং গ্লাভস পড়ব । তবে অনুস্টুপ তো অধিনায়ক রয়েছে । আমি কেন তা করতে যাব । তাছাড়া অধিনায়কত্বের ব্যাটন না-থাকলেও কি আমি অধিনায়ক নই । দলের প্রয়োজনে সবসময় পরামর্শ দিয়ে এসেছি । আগামী চারদিনও তাই করব ।“
দীর্ঘ ক্রিকেট জীবন । বাংলার জেলা শহর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের রাজপথে যাত্রা করেছেন । ভারতীয় দল থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রচুর শব্দ খরচ হয়েছে । ঋদ্ধিমান বলছেন, “কোনও আক্ষেপ নেই । আজ কিছু করেছিলাম বলেই তো এতটা এসেছি । দেশের হয়ে খেলা । 17 বছর আইপিএল খেলেছি । তাই আক্ষেপ কেন করব ।”
দীর্ঘ ক্রিকেট জীবনে সাফল্যের সংখ্যা প্রচুর । তারমধ্যে থেকে সেরা কোনটা, তা এককথায় বেছে নিতে রাজি নন । বরং বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন । বাংলার হয়ে ওয়ান ডে টুর্নামেন্ট, টি-20 ট্রফি জয়, আইপিএল, দলীপ ট্রফি জয়কে তালিকায় ওপরের দিকে রাখছেন । রঞ্জি ট্রফি না-জিততে পারার খচখচানি থাকলেও ঋদ্ধিমান বলছেন, অন্য ভূমিকায় থেকে হয়তো তা পূরণ হবে ।
নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলতে গিয়ে সিএবির ভাবনা-চিন্তার কথা জানতে চান । তবে ত্রিপুরা যাওয়ার আগে ঋদ্ধিমান সিএবিকে বলেছিলেন, অন্য ভূমিকাতে বাংলাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত । ব্যাট তুলে রাখার লগ্নেও একই কথার পুনরাবৃত্তি করলেন । ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিলেন ।
|