দুর্গাপুর, 6 জুন: গতকাল, বুধবার ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস ৷ সেই দিবস পালন করতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) ৷ অভিযোগ, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের প্রতিকৃতিকে কবর দিয়ে তার ওপরে মাটি দিয়ে সবুজ গাছ লাগিয়ে দেন টিএমসিপির ছাত্ররা ৷ ওই পড়ুয়ারা সকলেই দুর্গাপুরে আইটিআই-এর পড়েন ৷
দিলীপ ঘোষের ছবি ‘কবর’ দিয়ে বৃক্ষরোপণ, টিএমসিপি-র ‘কীর্তি’তে সমালোচনা দুর্গাপুরে (ইটিভি ভারত) এই নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকেই ৷ প্রশ্ন উঠেছে, এ কেমন শিক্ষা? এ কেমন রুচিবোধ ? রাজনৈতিক সৌজন্যতাবোধ হারিয়ে এরা কারা ? বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের নামে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের একটি অংশ কেন এই কদর্য উদাহরণ তৈরি করল ?
মাটি চাপা দেওয়ার আগে দিলীপ ঘোষের ছবি৷ (নিজস্ব চিত্র) উল্লেখ্য, বুধবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে দুর্গাপুরের মুচিপাড়া সংলগ্ন আইটিআই-তে একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয় । আর সেখানে টিএমসিপি নেতা অরিজিৎ পাল ও সৌভিক সেনের নেতৃত্বে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের একটি রঙিন ছবিকে গর্ত খুঁড়ে মাটি চাপা দিয়ে তার ওপর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে । সেই কর্মসূচির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন ছাত্রদের একটা অংশ । তার পরই এই নিয়ে সমালোচনায় সরব হন শহরের বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল ।
দিলীপ ঘোষের ছবি মাটি চাপা দিচ্ছে টিএমসিপি৷ (নিজস্ব চিত্র) দুর্গাপুরের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক কলিমুল হক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বুকে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা আগামিদিনে যেন না ঘটে, তার আহ্বান জানিয়ে দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই । যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সৌভিক সেনের দাবি, প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বর্ধমান-দুর্গাপুরে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করেছিলেন দিলীপ ঘোষ ৷ তার প্রতিবাদেই এই বৃক্ষরোপণ ৷
দিলীপ ঘোষের ছবি মাটি চাপা দেওয়ার পর সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি টিএমসিপির (নিজস্ব চিত্র) অনেকেই বলছেন, এমন ঘটনা যেন আগামিদিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় কোনও রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা না হয়, সেই ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের । পাশাপাশি, শাসক দলের উচ্চ নেতৃত্বকে এমন কুরুচিপূর্ণ নেতার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলার রুচি সম্পন্ন রাজনীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে । যা আগামিদিনে মানুষের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে ৷