পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / lifestyle

ফোনে আশক্ত মারাত্বক ক্ষতির কারণ হতে পারে, ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্তি পান এভাবে

Side Effects Mobile Phone: শিশু হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক, আজকাল ফোন আসক্তি অর্থাৎ দিনের বেশির ভাগ সময় ফোনে কাটানো, এই অভ্যাস প্রায় সবার মধ্যেই দেখা যায় । এই অভ্যাসটি মানুষের জীবন, আচরণ এবং তাঁদের সম্পর্কের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।

By ETV Bharat Lifestyle Team

Published : 6 hours ago

Side Effects Mobile Phone News
ফোনের আশক্তি মারাত্বক ক্ষতির কারণ (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা: আজকাল বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ডিজিটাল আসক্তি বা ইন্টারনেট আসক্তিতে ভুগে থাকেন । উদ্বেগের বিষয় হল, এই আসক্তির শিকার হওয়া অধিকাংশ মানুষই জানেন না তাঁদের এই সমস্যার কথা ৷ অনেকে এটাকে কোনও সমস্যা বলে মনেও করেন না ।

আজকের ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে । কাজ যাই হোক না কেন, আমাদের ফোন ছাড়া অসম্পূর্ণ বোধ করি । কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার আসক্তিতে পরিণত হতে পারে ? ফোন আসক্তি আজকাল সাধারণ হয়ে উঠেছে ৷ ফলে শিশু, যুবক এবং বৃদ্ধ সবাই এই আসক্তির শিকার হচ্ছে ।

নয়াদিল্লির মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিস সিং বলেন, "তাঁর রোগীদের মধ্যে, প্রচুর সংখ্যক মানুষ রয়েছেন যাঁরা ফোন আসক্তির প্রভাবের কারণে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন । আর এরমধ্যে শিশু, যুবক ও বৃদ্ধ সকলে বর্তমান ।"

তিনি ব্যাখ্যা করেন, মোবাইল আসক্তি শুধুমাত্র আমাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না বরং আমাদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে । এমনকি এই আসক্তি আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবন, আচরণ ও সম্পর্ককে প্রভাবিত করে । তাই এই নেশা পরিহার করা আজ বড় প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে । ফোনের আসক্তি এড়াতে আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে এবং ফোনের ব্যবহার সীমিত করতে হবে । শুধুমাত্র সুষম ব্যবহারই আমাদের এই আসক্তি থেকে বাঁচাতে পারে । এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মানুষ বুঝতে পারে যে প্রযুক্তি আমাদের জন্য, আমরা প্রযুক্তির জন্য নয় ।

মোবাইল আসক্তির অসুবিধা (Disadvantages of mobile Addiction):

ডাঃ আশিস সিং বলেন, "ফোন আসক্তি আমাদের মানসিক এবং শারীরিক উভয় স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে । ক্রমাগত ফোন ব্যবহারের ফলে চোখের জ্বালা, মাথাব্যথা, ঘুমের অভাব এবং মানসিক চাপের মতো সমস্যা হতে পারে । একই সময়ে যখন আমরা বেশিরভাগ সময় ফোনে ব্যয় করি, তখন আমাদের সামাজিক এবং পারিবারিক জীবনও প্রভাবিত হয় । আমাদের প্রিয়জনের সঙ্গে কম দেখা করি, কথা বলার পরিবর্তে বার্তাগুলিতে বেশি মনোযোগ দি এবং বাস্তব জীবন থেকে দূরে সরে যাই । একই সময়ে মানুষ যখন পরিবারে একসঙ্গে বসে, একে অপরের সঙ্গে কথা বলার পরিবর্তে বা তাঁদের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিবর্তে ফোনে ব্যস্ত থাকে ৷ যার কারণে সম্পর্কের মধ্যে অকথ্য দূরত্ব দেখা দিতে শুরু করে ।"

তিনি ব্যাখ্যা করেন, ফোন আসক্তির পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে । যারমধ্যে প্রথম কারণ সোশাল মিডিয়া । মানুষ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপগুলিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করে থাকেন । সারাক্ষণ আপডেট থাকা, রিল দেখা, লাইক-কমেন্ট দেখা এক ধরনের নেশা হয়ে যায় । দ্বিতীয় কারণ হল অনলাইন গেম । অনেকেই গেম খেলতে এতটাই মগ্ন হয়ে পড়েন যে সময়টাও খেয়াল করেন না । তাছাড়া আজকাল আমাদের কাজ ও পড়াশোনার জন্য ফোনের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে ৷ যার কারণে আমরা এর থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে পারি না ।

ফোন আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় (Ways to get rid of phone addiction):

ডঃ আশিস সিং ব্যাখ্যা করেন, আপনার অভ্যাস এবং রুটিনে কিছু জিনিস এবং সতর্কতা অন্তর্ভুক্ত করা এই আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে বা এর প্রভাব কমাতে অনেক সাহায্য করতে পারে, যার মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ ।

একটি রুটিন সেট করুন: ফোন ব্যবহারের জন্য একটি সময়সীমা সেট করুন । উদাহরণস্বরূপ, খাওয়ার সময়, ঘুমানোর সময় বা বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় ফোন ব্যবহার করা উচিত নয় ।

ডিজিটাল ডিটক্স: সপ্তাহে একবার ডিজিটাল ডিটক্স চেষ্টা করুন । দিনে ফোন, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য গ্যাজেটের ব্যবহার কমিয়ে দিন । আপনি এর বদলে একটা দিন নিজেকে সময় দিন ৷ বই পড়া বা প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন ৷

বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করুন: ফোনে ঘন ঘন বিজ্ঞপ্তি আমাদের বিভ্রান্ত করে । অপ্রয়োজনীয় অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করুন ৷ যাতে বারবার আপনার ফোন চেক না করেন ।

স্বাস্থ্যকর কার্যকলাপ গ্রহণ করুন: ফোন ব্যবহার না করে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর ক্রিয়াকলাপে মনোযোগ দিন । যেমন, যোগব্যায়াম, ধ্যান, অধ্যয়ন করা, গান শোনা বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো ইত্যাদি ।

https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC6449671/

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)

ABOUT THE AUTHOR

...view details