পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / international

কম্পিউটার-ভক্ত, চোখের চিকিৎসক বাশার কীভাবে হয়ে উঠলেন সিরিয়ার চক্ষ্মুশূল! - BASHAR ASSAD

রাজনীতিতে আসার আগে পেশায় ছিলেন চোখের চিকিৎসক। পড়াশুনো করেছেন পশ্চিমী দুনিয়ায়। শেষমেশ তাঁর হাতেই আসেন সিরিয়ার ব্য়াটন। এবার তারই মহাপতনের সাক্ষী সিরিয়া ।

bashar-assa
বাশার আল আসাদ (সংবাদসংস্থা এপিটিএন)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 8, 2024, 11:02 PM IST

দামাস্কাস, 8 ডিসেম্বর: সময় হিসেবে 24 বছর মোটেই কম নয় । তবে দু'দশক আগে দেশবাসীর কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা এক নেতাকে ঠিক কেন এবং কীভাবে চুপিসারে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয় তা অবশ্যই আগামিদিনের রাজনীতির ছাত্রদের কাছে চর্চার বিষয় হতে চলেছে ।

রাজনীতির শুরু

বাশার আল-আসাদ সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন পারিবারিক সূত্র ধরেই। তাতে দেশের লোকের সমর্থন ছিল না এমন ভাবার কোনও কারণ নেই । বাবা হাফিজ আল-আজাদের মৃত্যুর পর সামান্য সময়ের মধ্যেই তাঁকে দেশের প্রধান হিসেবে বেছে নেয় সংসদ। তার জন্য বদলাতে হয়েছিল আইনও । তখনও পর্যন্ত নিয়ম ছিল সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি হতে গেলে কোনও ব্যক্তির বয়স 40 হতেই হবে। আসাদ তখন সবে 34 । তাতে কী? আইন বদলে গেল রাতারাতি। তাঁর জন্য হল গণভোট । সেখানে প্রার্থী শুধু তিনি ।

রাজনীতিতে আসার আগে পেশায় ছিলেন চোখের চিকিৎসক। পড়াশুনো করেছেন পশ্চিমী দুনিয়ায়। বাবা প্রথমে বাশারকে রাজনীতিতে আনতেও চাননি বলে শোনা যায়। বড় ছেলে বাসিলের হাতেই সিরিয়ার ভাগ্য ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। সেটা হয়নি । 1994 সালে এক পথ দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণ যায়। লন্ডনের ডাক্তারি পেশা ছেড়ের বাবার আদেশে দেশে ফেরেন বাশার। পরে তাঁর হাতেই যায় দেশের ব্যাটন ।

সিরিয়ার বাশার-আশা

হাফিজের পরে বাশারকে মেনে নিতে তেমন সমস্যাও হয়নি সিরিয়ার নাগরিকদের । তাঁদের মনে হয়েছিল বাবার পথে ছেলে হাঁটবেন না। একনায়কতন্ত্র চলবে না । প্রথম দিকেও তাই হতো । রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে মাত্র একটি সরকারি দায়িত্ব সামলেছিলেন। সিরিয়ার কম্পিউটার সোসাইটির সভাপতি ছিলেন বাশার। রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আসমা আল- আখ্রাসকে বিয়ে করেন । তাদের তিন সন্তানও হয়। বাশার-আসমার সুখের সংসারে তখন আধুনিকতার ছোঁয়া। দমন-পীড়নের কালো অধ্যায় ভুলে যেতে এই তরুণ দম্পতির উপরই আস্থা রেখেছিল সিরিয়া । তবে সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি ।

2011 সালের মার্চ মাস থেকে দেশের পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে । ক্ষমতা ছাড়তে হবে বুঝতে পেরে বাবার মতোই রাষ্ট্রযন্ত্রের দাঁত-নখ বেরিয়ে আসতে শুরু করে বাশারের সময়। জনপ্রিয়তার ঘাটতিও এখান থেকেই। তবে ইরান থেকে শুরু করে রাশিয়ার সমর্থন ছিল বলে বারবার বিপদের হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন । দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলছে বহু বছর ধরে। তার জেরে কমপক্ষে 5 লক্ষ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। একটি সূত্র বলছে কমপক্ষে 23 লক্ষ লোক কোনও না কোনওভাবে গৃহযুদ্ধের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। ক্ষমতায় থাকতে হিংসার রাজনীতির সাহায্যও নিয়েছেন বাশার আল-আসাদ ।

শান্তি নয় স্বস্তি

মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত সিরিয়ার পরিস্থিতিতে সামান্য বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। দেশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ আবার ফিরে পেয়েছিলেন বাশার। আশপাশের দেশও বাশারকেই সিরিয়ার মূল শক্তি মনে করতে শুরু করেছিল। তখনও অবশ্য দেশের উত্তর-পূর্ব দিকে জঙ্গিদেরই দাপট ছিল । এর মধ্যেও আরব লিগে সিরিয়াকে তাদের সংগঠনে ফিরিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, সৌদি আরব গত মে মাসে সিরিয়ার জন্য এক রাষ্ট্রদূতের নামও ঘোষণা করে । গত 12 বছরে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে নভেম্বরর শেষ থেকে সিরিয়া আবার ফিরে যেতে শুরু করে কয়েক বছর আগে । জঙ্গিদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয় সরকারকে । ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে থাকে । তার একটা বড় কারণ ইরান এবং রাশিয়া এখন দুনিয়ার দু'জায়গায় হওয়া যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত । আর তাই একা কুম্ভ রক্ষা করা হল না বাশারের ।

(তথ্যসূত্র: পিটিআই)

ABOUT THE AUTHOR

...view details