কলকাতা, 22 জানুয়ারি: ফের লালবাজারের জালে এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর নাম-পরিচয় গোপন রেখে প্রায় চার বছর আগে বাংলাদেশের কক্স বাজার থেকে বেআইনিভাবে অসম সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকেন । শুধু তাই নয় । দিল্লি, চেন্নাই হয়ে কলকাতায় এসে নামী সংস্থায় চাকরিও করেছেন তিনি ৷ তাঁকে গতকাল মধ্যমগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ ৷
অভিযোগ, ভারতে ঢুকে ওই ব্যক্তি নকল একাধিক পরিচয় পত্র বানিয়ে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন । সেখানে নামী একটি সংস্থায় বেশ কয়েক বছর কাজও করেন তিনি । দিল্লি থেকে তিনি চলে যান চেন্নাই । এরপর কলকাতায় এসে অন্য একটি বেসরকারি সংস্থায় ঢোকেন । অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গত পরশু ওই ব্যক্তির সন্ধান পায় লালবাজার । গতকাল তাঁকে মধ্যমগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় । আজ লাগাতার জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, ওই ব্যক্তির আসল নাম চয়ন বড়ুয়া ।
এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার ইটিভি ভারতকে বলেন, "চয়ন বড়ুয়া নামে ওই ব্যক্তি নিজের নাম পরিবর্তন করে নকল কাগজপত্রে নিজের নাম লিখতে শুরু করে পলাশ বিশ্বাস । তার কাছ থেকে নকল আধার কার্ড, প্যান কার্ড-সহ যে নথিপত্রগুলি পাওয়া গিয়েছে, সেখানে তার নাম পলাশ বিশ্বাস রয়েছে । সে কী করতে বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে ভারতে ঢুকে এত বছর কাটিয়ে দিল, সেই বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি ৷"
তবে বাংলাদেশি গ্রেফতার এই প্রথম নয় । রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি এবং জেলা পুলিশের হাতেও গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার হয়েছে । বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলাকালীন সেখানকার একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের মুক্তি দেয় সে দেশের সরকার । গোপন সূত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরের কাছে খবর আসে যে, বাংলাদেশের এই সব নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলগুলিকে নতুন করে সক্রিয় করার জন্য ভারতের স্লিপার সেলকে মজবুত করতে সচেষ্ট সংগঠনের সদস্যরা । ফলে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়়েছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনিভাবে ভারতে ঢুকেছে ৷ তারা নকল কাগজপত্র বানিয়ে নিজেদের হুলিয়া পরিবর্তন করে ভারত থেকে অন্য দেশেও পাড়ি দিয়েছে । তারা গিয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও কানাডা । ফলে এই বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার ।"