কলকাতা, 16 ডিসেম্বর: চিন্ময়কৃষ্ণ দাস কি জামিন পাবেন ? সেই উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় থেকে সারা বিশ্বের সনাতনীরা ৷ এই অপেক্ষার ইতিবাচক অবসান হবে কি না, তা জানা যাবে আগামী 2 জানুয়ারি ৷ আর সেদিন চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে এজলাসে লড়াই করবেন বলে জানিয়ে দিলেন মুক্তিযোদ্ধা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ৷
পেশায় আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এখন ভারতে ৷ চিকিৎসার কারণে তিনি এই দেশে এসেছেন ৷ তার মাঝেই ইটিভি ভারত-কে তিনি বলেন, "আমি শীঘ্রই দেশে ফিরব । আগামী বছর 2 জানুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর কেসের শুনানি আছে । আমি সেটা লড়ব ।"
আগামী 2 জানুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে আদালতে লড়ব, ভারতে এসে জানালেন আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (ইটিভি ভারত)
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই উত্তাল হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ ৷ প্রথমে ওই দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র-বিক্ষোভ শুরু হয় ৷ তার পর হাসিনা-সরকার আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিতে শুরু করলে পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে ৷ গত 5 অগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন হাসিনা ৷ তৈরি হয় অন্তর্বর্তী সরকার ৷ যার প্রধান করা হয় নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনুসকে ৷
তার পরও শান্ত হয়নি বাংলাদেশ ৷ বরং সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে বারবার ৷ তার প্রতিবাদে যে আন্দোলন সংঘঠিত হয়েছে, সেই আন্দোলনে অন্যতম মুখ ছিলেন হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস প্রভু ৷ কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে ৷ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আপাতত তিনি কারাবন্দি ৷
চলতি মাসের গোড়ার দিকে তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল চট্টগ্রাম আদালতে ৷ সেদিন চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে কোনও আইনজীবী না-থাকায় শুনানি হয়নি ৷ আদালত প্রায় মাসখানেকের জন্য শুনানি পিছিয়ে দেয় ৷ আগামী 2 জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি ৷
আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (ফাইল ছবি)
কিন্তু সেদিন কি শুনানি হবে ? কারণ, শেষ শুনানির দিন চিন্ময়ের হয়ে আইনজীবীদের লড়তে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল ৷ আইনজীবীদের মারধরও করার অভিযোগ উঠেছিল ৷ সেই বিষয়টি উঠে এসেছে আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কথাতেও ৷
তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমি ওঁর আইনজীবী । সেই আইনজীবীর কর্তব্য পালন করতে গিয়েছিলাম । আমি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম ওঁর মামলাটা লড়ব বলে । কিন্তু আমাকে সেই মামলাটা লড়তে দেওয়া হয়নি । বিভিন্নভাবে আমার উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে । আমি বিভিন্ন মানুষের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছি । আমাকে আমার মামলাটাও লড়তে দেননি বিভিন্ন আইনজীবীরা ।" তাই আগামী 2 জানুয়ারিও একই পরিস্থিতি তৈরি হবে কি না, সেই বিষয়েও নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়তো এখনই সম্ভব নয় ৷
এদিকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের অনেকেই দেশ ছাড়তে চাইছেন ৷ সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই ভারতে আসতে গিয়ে সীমান্তে আটক হয়েছেন বিএসএফের হাতে ৷ সেই প্রসঙ্গে আইনজীবী বলেন, "বহু মানুষে ভয়ে আছেন এই দেশে । কিন্তু আমি রাজনীতি করি না । আমি মানবাধিকার কর্মী । আমার দায়িত্ব হল মানুষের অধিকার তাদের পাইয়ে দেওয়া । তাহলে আমি দেশ থেকে পালিয়ে আসব কেন ? আমি আমার দেশেই থাকব ।"