হায়দরাবাদ, 10 এপ্রিল: আচমকাই দেখলেন হাতের আঙুল হালকা কাঁপতে শুরু করেছে । ঠিক মতো পেন বা কোনও জিনিস ধরতে পারছেন না । বা দেখছেন আপনার কোনও প্রিয়জনের হাত চালানোর গতি ধীর হয়ে গিয়েছে । এমন লক্ষণ যদি দেখেন দেরী করবেন না । হতে পারে স্নায়ুর রোগ । 11 এপ্রিল ওয়ার্ল্ড পারকিনসনস ডে-তে সচেতনতার পথ দেখালেন বিশিষ্ট স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ।
প্রঃ প্রথমেই জানা যাক, পারকিনসন রোগ আসলে কী?
উঃ চিকিৎসক অরিন্দম ঘোষ জানান, পারকিনসন রোগ হল একটি প্রগতিমূলক নার্ভাস সিস্টেম ডিসঅর্ডার বা স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি যা শরীরে নড়া-চড়াকে প্রভাবিত করে। লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে বোঝা যায়। কখনও কখনও শুধুমাত্র এক হাতে হালকা কাঁপুনি দিয়ে শুরু হয়। আবার কখনও শরীরের কোনও একটা অংশ স্টিভ বা শিথিল হতে যেতে পারে । মূলত, মস্তিষ্কে বেসাল গ্যাংলিয়ার স্নায়ু কোষ যা গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করে তা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ও শরীরে ডোপামাইন রসায়নের (কেমিক্যাল) তারতম্য ঘটলে এই রোগ হয় ।
প্রঃ কাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি?
উঃ 1. সাধারণত মধ্য বা বয়স্কদের একটি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি । রোগে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স ধরা যেতে পারে প্রায় 60 বছর।
2. নারীদের তুলনায় পুরুষরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন।
3. একই পরিবারে একাধিক সদস্য এই রোগে আক্রান্ত হলে ঝুঁকি আরও বেশি।
4. কোনও রকম কীটনাশক (pesticides) এবং হার্বিসাইডের (herbicides) সংস্পর্শে এলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
5. মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে পারকিনসনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে ৷
প্রঃ এই রোগের সাধারণ লক্ষণগুলি কি কি?
উঃ 1. কাঁপুনি: প্রথমে কোনও আঙুলে বা হাতে কাঁপুনি শুরু হতে পারে । ধীরে ধীরে তা শরীরের বাকি অঙ্গগুলিকে প্রভাবিত করে । বিশেষ করে কোনও সময়ে হয়তো একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন তখনও হাত অনবরত কেঁপে যাচ্ছে ৷ তাহলে চিন্তার কারণ আছে।
2. মন্থর গতিবিধি (ব্র্যাডিকাইনেসিয়া): পারকিনসন আক্রান্ত রোগীদের চলাফেরা মন্থর হয়ে যায়। সহজ কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। হাঁটার সময়, পদক্ষেপ ছোট হয়ে যেতে পারে বা চেয়ার থেকে উঠতে বা রাতে বিছানায় নড়াচড়া করতে অসুবিধা হতে পারে।
3. অ-নমনীয় পেশী: আপনার শরীরের যে কোনও অংশে পেশী শক্ত হয়ে যেতে পারে। শক্ত পেশী যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।
4. ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা: আস্তে আস্তে ঝুঁকে চলা বা বা হাঁটার সময় ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা হতে পারে।
5. স্বয়ংক্রিয় নড়াচড়ার অবনতি: শরীরের কোনও অঙ্গ নাড়ানোর ক্ষেত্রে ভারসাম্য না থাকা বা হাঁটার সময় চোখের পলক ফেলা, হাসতে বা হাঁটবার সময় হাত না নাড়াতে পারার মতো সমস্যা দেখা দেওয়া।