হায়দরাবাদ, 1 নভেম্বর: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমানিত করা হয়েছে কমেডি শো 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এ ৷ এমন অভিযোগ তুলে সরব কবি-লেখক শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সোশাল মিডিয়ার পেজে ঘটনার তীব্র নিন্দা করে লিখিত অভিযোগ জানালেন লেখক ৷ নেটপাড়ায় সরব নেটিজেনরাও ৷
বর্তমানে একনম্বর কমেডি শোয়ের প্রসঙ্গ উঠলে নাম আসবে 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এর ৷ কৌতুকশিল্পী কপিলের শো এখন দেশের বাইরে বিদেশেও ট্রেন্ডিং ৷ তারমধ্যেই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মস্করার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেওয়ার অভিযোগে সরব শ্রীজাত ৷ শোয়ে কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালেন ৷
দীর্ঘ পোস্টে তিনি লেখেন, "অভিনেতা ও কৌতুকশিল্পী কপিল শর্মা’র আমি একজন অনুরাগী। প্রতিভা, পরিশ্রম, অধ্যবসায়, লড়াই, কোনওটারই অভাব তাঁর ছিল না।...এই অনুষ্ঠানকে সফল করে তোলায় সেসব আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের অবদান যেমন আছে, তেমনই আছে কপিল শর্মা’র সহশিল্পীদের অবদানও, প্রতিটি পর্বে যাঁদের কৌতুক এই অনুষ্ঠানকে আরও রংদার ও জমজমাট করে তোলে। .....আমি নিশ্চিত এই শো-এর চিত্রনাট্য লেখার জন্য নির্দিষ্ট লেখকরা আছেন এবং নিঃসন্দেহে কপিল শর্মারও সে-বিষয়ে বক্তব্য, সংযোজন ও সম্মতি আছে। তাই যদি ধ’রে নিই, তাহলে বলতে হয়, এঁরা সম্প্রতি জেনে বা না-জেনে একটি অন্যায় করেছেন। ভুল নয়, অন্যায়। আমি স্পষ্ট ভাষায় তার বিরোধিতা করার জন্য প্রাথমিক ভাবে এই লেখাটি লিখছি। "
শ্রীজাত এরপরেই লেখেন, "দিনপাঁচেক আগে নেটফ্লিক্সে দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো-এর একটি নতুন পর্ব সংযোজিত হয়, যেখানে অতিথিদের মধ্যে অভিনেত্রী কাজল ও কৃতী স্যানন উপস্থিত থাকেন।কপিলের এক সহকারী শিল্পী বা কৌতুকাভিনেতা কৃষ্ণ অভিষেক উপস্থিত হন (যিনি নিজের নাম Krushna Abhishek লেখেন), এবং সম্ভবত কাজলকে বাঙালি বংশোদ্ভুত হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মস্করার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেন। হঠাৎ তো বেছে নেননি, সেভাবেই চিত্রনাট্য সাজানো ছিল। ঠিক কী হয়েছে, কেমনভাবে হয়েছে, এখানে বিস্তারিত বলছি না। কিন্তু ‘একলা চলো রে’ গানটি নিয়ে কৃষ্ণ অভিষেক যে-ব্যাঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার উদ্রেক করেছেন, তা সম্মান ও শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে বহুদূর চলে গেছে, অন্তত আমার চোখে। এই কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে আমি আমার লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালাম। যে বা যাঁরা ওই কৌতুকদৃশ্য রচনায়, উপস্থাপনায়, অনুমোদনে ও সম্প্রচারে জড়িত থাকলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালাম। স্পষ্ট ভাষায়, দ্ব্যর্থ উচ্চারণে।"
অভিযোগে উঠে আসে- কৌতুক আর তামাশা’র মধ্যে একটা সূক্ষ্ম রেখা আছে, সেটা ঝাপসা হয়ে এলেই বিপদ। কী বলছি, কাকে নিয়ে বলছি, কতটুকু বলছি, এসব না-ভেবে কেবল লোক-হাসানো TRP-র জন্য নিবেদিতপ্রাণ হতে হতে মানুষ এক সময়ে নিজের সীমা বিস্মৃত হয়। তখন তাকে মনে করিয়ে দিতে হয়, এই চৌকাঠ পেরনো তোমার উচিত হয়নি। আমি সেটুকুই করছি।