পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / entertainment

কেন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সাময়িক বিরতি চান তারকারা? উত্তর খুঁজল ইটিভি ভারত - SOCIAL MEDIA DETOX

SOCIAL MEDIA DETOX: সকাল থেকে রাত-চোখ বেশিরভাগ সময়ই স্থির থাকে মুঠোফোনে ৷ জনপ্রিয় হওয়ার চাহিদা থেকে বাদ যান না তারকারাও ৷ তাই বিরতির খোঁজে তাঁরা সোশাল মিডিয়া ডিটক্সের পথে হাঁটেন ৷ এমনটা কেন হয় ? খোঁজ নিল ইটিভি ভারত ৷

WHAT IS SOCIAL MEDIA DETOX
সোশাল মিডিয়া থেকে বিরতি (ইটিভি ভারত)

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 24, 2024, 10:54 PM IST

কলকাতা, 24 জুন: ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টিকটকের দৌলতে তারকাদের জীবন থাকে অনুরাগীদের নখদর্পণে ৷ সেলেব্রিটিরাও ফ্যাশন, ডায়েট থেকে রোজনামচা জীবনের নানা মুহূর্ত ভাগ করে নেন সোশাল মিডিয়ায় ৷ এখন সেই সোশাল মিডিয়া থেকেই মুখ ফেরাচ্ছেন অনেক তারকা ৷ উদাহরণ, 'গভীর জলের মাছ' সিরিজের অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত ৷ জানালেন, সোশাল মিডিয়া ডিটক্স করতে চান ৷ কেন এমন বললেন অভিনেত্রী? সোশাল মিডিয়া ডিটক্স কথার অর্থই বা কী? উত্তর খুঁজল ইটিভি ভারত ৷

অভিনেত্রী স্বস্তিকা ইনস্টাগ্রামে লেখেন, "সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কিছুদিনের জন্য বিরতি নিচ্ছি। কিছুদিন অফলাইন থাকব। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই আবার ফিরে আসব।" ইটিভি ভারত এর কারণ জানতে চাইলে অভিনেত্রী জানান, সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স করার দরকার পড়ে সবার। তাই বিরতি। তেমন সিরিয়াস কিছু না। এর থেকেই উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন ৷ সামাজিক মাধ্যমে ফ্যান ফলোয়ারের সংখ্যা বা তাঁদের কমেন্ট কি অভিনেতাদের জীবনে প্রভাব ফেলে ? অল্প দিনের জন্য হলেও সোশাল মিডিয়া থেকে কেন দূরে থাকতে চাইছেন সেলেবরা ?

প্রথমেই জানা যাক সোশাল মিডিয়া ডিটক্স আসলে কী? সোশ্যাল মিডিয়া ডিটক্স হল যখন কেউ তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উন্নতির জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বা অনির্দিষ্টকালের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া তথা সোশাল প্ল্যাটফর্ম থেকে দূরে থাকেন ৷ সোশাল মিডিয়ার ব্যবহার থেকে দূরে থাকেন ৷

অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিত ইটিভি ভারতকে বলেন, "বাবুসোনা বামনঘাটায় বসে কী ভাবছেন বা অন্যান্য মানুষকে কমেন্টে কী লিখছেন, তাতে আমার মনে হয় না কারও কিছু আসে যায়। শুধুমাত্রা সেলেব না এটা সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যাঁরা সামাজিক মাধ্যমে এসে নানাবিধ কমেন্টের মাধ্যমে নজর কাড়তে চান, আসলে তাঁদের জীবনের বিষাদ-অবসাদ কোথাও তো একটা জানানোর বা ছড়ানোর প্রয়োজন ৷ সে ক্ষেত্রে সোশাল মিডিয়ার থেকে ভালো কিছু হতে পারে না।"

তিনি আরও বলেন, "কারণ এটা এমন একটা ছলনার জায়গা, যেখানে কোনও মানুষ একটা ফেক আইডেনটিটি নিয়েও কমেন্ট করতে পারেন। আমার মনে হয় না কারও এতে কিছু সমস্যা হওয়া উচিত। আর কমেন্ট সেকশনে তো একটা অপশন আছে যেখানে কমেন্ট অফ করা যায় ৷ তা-ও যদি না ইচ্ছে হয়, সামাজিক মাধ্যম থেকে কিছুদিন সরে যাও। সবটাই তোমার নিজের ব্যাপার।"

অভিনেত্রী সোহিনী গুহ রায় বলেন, "অভিনেতা এবং দর্শকের মধ্যে সেতু বন্ধন করে সামাজিক মাধ্যম। আমার মনে হয় কাউকে পাবলিক ফিগার বানায় দর্শকরাই। সামাজিক মাধ্যম হওয়াতে তাঁরা তাঁদের চোখে দেখা ভালো এবং মন্দটা বলেন সেখানেই। আমার মনে হয় সেই সবকিছুর জন্য পাবলিক ফিগারকে প্রস্তুত থাকতে হয়। তাঁদের প্রশংসা যেমন উজ্জীবিত করে তেমনি তাঁদের খারাপ লাগা থেকে নিজেকে শুধরে নেওয়া যায়। সামাজিক মাধ্যমের ভালো এবং খারাপ দুইই আছে। তবে, কেউ যদি এই সব কিছু থেকে কয়েকদিনের জন্য ছুটি পেতে চান, তাহলে সেটা একেবারে তাঁর নিজস্ব ব্যাপার। তবে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ডিটক্সিফিকেশন, এই ব্যাপারটার কোনও মানে নেই।"

এই বিষয়ে মনোবিদ কেদাররঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "সোশাল মিডিয়ায় নানা কমেন্টস কোথাও না কোথাও সেলেবদের জীবনে পরোক্ষ প্রভাব ফেলে ৷ একটা ছবি বা ভিডিয়ো লাখখানেক লাইক হলেও তাতে যদি নেতিবাচক মন্তব্য বেশি থাকে, তার প্রচ্ছন্ন প্রভাব পড়েই ৷ একটা সময়ের পর সোশাল মিডিয়া ধরে তারকাদের আর উঠতে হয় না ৷ কারণ, তিনি তখন একটা জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন ৷ পাশাপাশি, সোশাল মিডিয়ায় নিজস্ব ক্যাপটিভেটেড জায়গা রয়েছে ৷ যেমন, অমিতাভ বচ্চন ফ্যান ক্লাব বা কিশোর কুমার ফ্যান ক্লাব, এইগুলির একটা নির্দিষ্ট ফলোয়ার সংখ্যা থাকে, যার অন্যথা হয় না ৷ ফলে সোশাল মিডিয়া জনপ্রিয় হওয়ার, চর্চায় থাকার, প্রচারের আলোয় থাকার একটা জায়গা হয়ে দাঁড়ায় ৷ কিন্তু সেখানে কোনও রকম সমস্যা হতেই পারে ৷ মানসিকভাবে শক্ত না হলে তার একটা প্রভাব অবশ্যই পড়ে ৷"

অর্থাৎ, সারাদিন ধরে সোশাল মিডিয়ায় থাকা, আলোচনায় থাকা, না থাকলে মন খারাপ হওয়া, স্পটলাইট থেকে দূরে সরে যাওয়ার একটা ভয় কাজ করে ৷ এই সব মন ও মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ৷ তাই মাঝে মধ্যে সুস্থ জীবনের জন্য সোশাল মিডিয়ার নানা অ্যাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখা ভালো ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details