হায়দরাবাদ: বছরভর বিরিয়ানির রাজত্ব চললেও রমজান মাস মানেই হায়দরাবাদে হালিমের রমরমা ৷ শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকে হালিমের অস্থায়ী দোকান ৷ হালিম হল আরবের খাবার ৷ এটি মূলত মাংসের কিমা, ভাঙা গম এবং প্রচুর মশলার মিশ্রণে তৈরি হয় ৷ 1869 থেকে 1911 সালের মধ্যে রাজ্য শাসন করাকালীন হায়দরাবাদের ষষ্ঠ নিজাম মাহবুব আলি খান হালিমের প্রচলন করেছিলেন ৷
প্রচলনের পর শীঘ্রই হায়দরাবাদের রন্ধনশৈলীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে হালিম ৷ গত কয়েক দশকে রমজানে এটি একটি আবশ্যকীয় খাবার হয়ে উঠেছে । আর এখন তো হালিম ইফতারের মূল খাবারে পরিণত হয়েছে ৷ কারণ মুসলমানরা খেজুর এবং জল দিয়ে রোজা ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে এটি খেতে পছন্দ করে । স্বাদের পাশাপাশি, থালাটি প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস ৷ এটি উপোসীদেরকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং পরের দিনের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে । এই হালিমের দাম প্রতি প্লেট 50 টাকা থেকে 300 টাকা পর্যন্ত রয়েছে ।
হায়দরাবাদের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে হালিম :
হায়দরাবাদের রাস্তায় ঘুরতে গিয়ে আপনি 'ভাট্টি' দেখতে পাবেন ৷ ইট ও কাদা দিয়ে বানানো উনুন ৷ হোটেল বা রাস্তার পাশে খাবারের দোকানের বাইরে সারিবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় ৷ রমজান মাসে হায়দরাবাদের বিখ্যাত বিরিয়ানির জনপ্রিয়তাকেও ছাপিয়ে যায় হালিম ৷ শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরাই নয়, অ-মুসলিমরাও হালিম খেতে রীতিমতো ভিড় জমান ৷ বছরের পর বছর ধরে, শহরের কিছু বিখ্যাত রেস্তোরাঁ হালিমের জন্য বিশেষ পরিচিত হয়েছে ৷ এসব রেস্তোরাঁর হালিম গুণমানের জন্য নাম করেছে । তার মধ্যে রয়েছে পিস্তা হাউস ৷ যেটি 1997 সাল থেকে হালিমের খাঁটি স্বাদ তৈরি এবং পরিবেশন করার দাবি করে ৷
পিস্তা হাউসের দাবি, রমজান মাসে প্রতিদিন 10 হাজার কেজি হালিম বিক্রি করে তারা ৷ গুণমান এবং স্বাস্থ্যবিধির উপর গুরুত্ব দেওয়াই হল রেস্টুরেন্টের মূল ইউএসপি । ইটিভি ভারত-এর সঙ্গে কথা বলার সময় পিস্তা হাউসের ফুড প্রোডাকশন ম্যানেজার মোহাম্মদ অখিল জানান, তাঁরা হালিম তৈরি করতে খাঁটি ভারতীয় মশলা, 100 শতাংশ মাটন এবং খাঁটি ঘি ব্যবহার করেন ৷ যা শহরের 40টিরও বেশি আউটলেটে বিক্রি হয় ।